বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬

দিলীপকুমার রায়কে লিখিত

ম্যাণ্ডেলে জেল
৯।১০।২৫

 একথা কিছুতেই মনে কোরো না যে, আমার দৃষ্টি নিতান্তই সঙ্কীর্ণ। “Greatest good of the greatest number” এতে আমি যথার্থ-ই বিশ্বাস করি, কিন্তু সে “good” আমার কাছে সম্পূর্ণ বস্তুগত নয়। অর্থনীতি বলে, মানুষের সকল কাজ হয় “productive” নয় “unproductive”; তবে কোন্ কাজ যে “productive,” তা নিয়ে অনেক বাক্‌বিতণ্ডা হ’য়ে থাকে। আমি কিন্তু কারুকলা বা সে সংক্রান্ত কোন প্রচেষ্টাকে “unproductive” মনে করিনে, আর দার্শনিক চিন্তা বা তত্ত্ব-জিজ্ঞাসাকে নিষ্ফল বা নিরর্থক ব’লে অবজ্ঞা করিনে। আমি নিজে একজন আর্টিষ্ট না হতে পারি—আর সত্যি বলতে কি আমি জানি যে তা নই—কিন্তু সে জন্যে দোষী প্রকৃতি বা ভগবান যাই বল, আমি নই। অবশ্য যদি বল যে আর জন্মের কর্ম্মফল এ জন্মে ভোগ করছি, তা’হলে আমি নাচার। সে যাই হ’ক এ জন্মে যে আর্টিষ্ট হ’লুম না তার কারণ, হতে পারলুম না, আর আমার বিশ্বাস শিল্পী জন্মায়, তৈরী করা যায় না, এ কথা অনেকটা সত্য। কিন্তু নিজে আর্টিষ্ট না হলেই যে আর্ট উপভোগ করা যায় না, এমন কোন কথা নেই, আর কোনও কলার সমঝদার হ’তে গেলে তাতে নিজের যেটুকু পরিমাণ দখল থাকা দরকার, আমার মনে হয় তা প্রত্যেক শিক্ষিত ব্যক্তির পক্ষেই সুলভ।

 দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ ক’রে এ আক্ষেপ কোরো না যে, সঙ্গীত নিয়ে তুমি সময়টা হেলায় কাটিয়ে দিচ্ছ, যখন শেক্ষপীয়রের কথায় বলতে গেলে “the time is out of joint”. বন্ধু, সারা দেশকে সঙ্গীতের বন্যায় প্লাবিত করে দাও, আর যে সহজ আনন্দ আমরা প্রায় হারিয়ে বসেছি,

১৮২