পাতা:পথের সঞ্চয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কবি য়েট্‌স্‌

সেই উপলব্ধির আনন্দই আমাদের উন্নতিপথযাত্রার একমাত্র সম্বল।

 শক্তি-উপলব্ধির গোড়ায় যে প্রবল অহংকার জাগিয়া উঠে তাহাতে সত্য-উপলব্ধির যথেষ্ট ব্যাঘাত করে। তাহা আমাদের আপনাকে শিখাইবার চেয়ে আপনাকে ভুলাইবার দিকেই বেশি ঝোঁক দেয়। তাহা সাঁচ্চার সঙ্গে ঝুটাকে সমান মূল্য দিয়া সাঁচ্চাকে অপমানিত করে। সে এ কথা ভুলিয়া যায় যে, কী আমার নাই এইটে সুনির্দিষ্ট করিয়া জানার দ্বারাতেই কী আমার আছে সেইটে সুস্পষ্ট করিয়া জানা যায়। সেই সুস্পষ্ট করিয়া জানাই আমাদের শক্তিলাভের একমাত্র পন্থা। অহংকার আত্ম-উপলব্ধির সীমাকে ঝাপসা করিয়া দিয়াই আমাদিগকে দুর্বলতা ও ব্যর্থতার দিকে লইয়া যায়। আত্মগৌরবের প্রতিষ্ঠা সত্যের উপর। সুতরাং অহংকারের দ্বারা তাহাকে কিছুতেই পাওয়া যায় না। সত্যের দুর্গপ্রাচীরে ঠেকিয়া ঠেকিয়া অহংকার যতই পরাস্ত হইতে থাকে ততই আমরা আপনাকে জানিতে থাকি।

 আমাদের দেশের মতো আয়র্লণ্ডেও আপনার চিত্তশক্তিকে স্বাতন্ত্র দিবার জন্য একটা উদ্যম কিছুকাল হইতে কাজ করিতেছে। সেই উদ্যমের প্রথম প্রকাশের মধ্যে স্বভাবতই বিস্তর ফেনিলতা দেখা দেয়; তাহা অনেক সময় ওজন রাখিতে না পারিয়া অদ্ভুতরূপে হাস্যকর হইয়া উঠে; আয়র্লণ্ডেও যে সেরূপ ঘটিয়াছিল তাহা আইরিশ বিখ্যাত লেখক জর্জ মুরের Hail and Farewell নামক বই পড়িলে কতকটা বুঝা যায়।

 যাহা হউক, আয়ার্লণ্ড নিজের চিত্তস্বাতন্ত্র প্রকাশ করিবার

১০৯