পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্রধারা ما سرا দিহির ধার ধারে না। কিন্তু এই অতীত বস্তুত কোনোদিনই ছিল না—যা ছিল তা বত মান—তার প্রত্যেক মুহূত বোঝা পিঠে সার বেঁধে চলেছিল তার হিসেব দিতে হয়েছে । “গত কাল” ব’লে যে-অতীত সে আজই আছে, গতকাল সে ছিলই না । স্বপ্নরূপিণী সে, বতমানের বা পাশে ব’সে আছে— মধুর হয়ে উঠতে তার কোনো খরচ নেই। সেইজন্তেই বত মান কালের মধ্যে যখন কোনো একটা দিনের বিশুদ্ধ সুন্দর চেহারা দেখি তখন বলি সে অতীতকালের সাজ পরে এসেছে—প্রেয়সীকে বলি তুমি যেন আমার জন্মান্তরের জানা, অর্থাৎ এমন কালের জানা যে-কাল সকল কালের অতীত— যে-কালে স্বর্গ, যে-কালে সত্য যুগ—যে-কাল চির অনায়ত্ত । আজকের এই যে সোনায় পান্নায় ছায়ায় আলোয় বিজড়িত সুগভীর অবকাশের মধুতে ভরা মধ্যাহ্নটি স্বদূর বিস্তৃত সবুজ মাঠের উপর বিহ্বল হয়ে পড়ে আছে এর অনুভূতির মধ্যে একটা বেদন। এই আছে-যে একে পাওয়া যায় না, ছোওয়া যায় না, সংগ্রহ করা যায় না—অর্থাৎ এ আছে তবুও নেই। সেইজন্তেই একে দূর অতীতের ভূমিকার মধ্যে দেখি। সেই অতীতের যা মাধুরী তা বিশুদ্ধ ; সেই অতীতে যা হারিয়েছে ব’লে নিঃশ্বাস ফেলি তার সঙ্গে এমন আরো অনেক হারিয়েছে যা সুন্দর নয় সুখকর নয়, কিন্তু সেগুলি অতীত নয়, তা বিনষ্ট —যা সুন্দর যা সুখের তাই চির অতীত—তা কোনোদিন মরে না, অথচ তার মধ্যে অস্তিত্বের কোনো ভার নেই। : আজকের এই দিনটা সেই রকমের—এ আছে তবু নেই—