পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্র ধারা ساما ،SDC) আমার চিঠিগুলো চিঠি নয় এই তর্ক উঠেছে । আমি নিজে অনেকবার স্বীকার করেছি যে আমি চিঠি লিখতে পারিনে। y/এটা গর্ব করবার কথা নয়। আমরা যে জগতে বাস করি সেখানে কেবল-যে চিন্তা করবার কিংবা কল্পনা করবার বিষয় আছে তা নয়। সেখানকার অনেকটা অংশই ঘটনার ধারা,—অন্তত যেটা আমাদের চোখে পড়ে, সেটt একটা ব্যাপার ; সে কেবল হচ্ছে চলছে আসছে যাচ্ছে ; অস্তিত্বের সদর রাস্ত দিয়ে চলাচল, তার ভিতরকার সব আসল খবর আমাদের নজরে পড়ে না । মাঝে মাঝে যদি বা পড়ে, তাদের ধরে রাখিনে, পথ ছেড়ে দিই ; সমস্ত ধরতে গেলে মনের বোঝা অসহ ভারি হয়ে উঠত। আমাদের ঘরের ভিতর দিকটাতে সংসারের সংকীর্ণ দেয়াল-ঘেরা সীমানার মধ্যে আমাদের অনেক ভাবনার জিনিস, অনেক চেষ্টার বিষয় আছে তার ভার আমাদের বহন করতে হয়। কিন্তু যখন জানলায় এসে বসি তখন রাস্তায় দেখি চলাচলের চেহারা। ভালে। করে যদি খোজ নিতে পারতুম তাহলে দেখতুম তার কোনো অংশই হালকা নয়,—ট্রাম হুহু ক’রে চলে গেল কিন্তু তার পিছনে মস্ত একটা ট্রাম কম্পানি,—সমুদ্রের এপারে ওপারে তার হিসেব চালাচালি। মানুষটা ছাতা বগলে নিয়ে চলেছে, মোটরগাড়ি তার সর্বাঙ্গে কাদা ছিটিয়ে চলে গেল—তার সব কথাটা যদি চোখে পড়ত তাহলে দেখতুম বৃহৎ কাণ্ড-মুখে ।