পাতা:পরশুরামকুন্ড ও বদরিকাশ্রম পরিভ্রমণ - পদ্মনাথ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরশুরাম কুণ্ড । NG যাত্রীর সংখ্যা । সন ১৩১৩ সালের উত্তরায়ণ সংক্রান্তির পূর্বাহে আমি কুণ্ডে পৌছি । একে পূণ্য সংক্রান্তির দিন, তাহাতে সোমবার অমাবস্যা ও সূৰ্য্যগ্ৰহণ ; এই উপলক্ষে প্ৰায় ৫০০ শত যাত্রীর সমাগম হইয়াছিল । এত যাত্রী নাকি আর কখনও পরশুরাম তীর্থে আইসে নাই। কুণ্ডে পৌছবার প্রায় পোয়া মাইল দূর হইতেই পথের দুই পাশ্বে যাত্ৰিগণের সন্নিবেশ দেখিলাম। সাধু সন্ন্যাসীর সংখ্যা ১৫০ এর নূ্যন হইবে না। অবশিষ্ট যাত্ৰিগণের অৰ্দ্ধাংশ স্ত্রীলোক । তীর্থপ্রিয় বাঙ্গালী অতি কমই দেখা গেল । মাড়ওয়ারী নেপালী, চা বাগানের কুলী ও অসমীয়া স্ত্রী পুরুষ-যাহারা লক্ষ্মীমপুর জেলার অধিবাসী-ই হারাই সচরাচর পরশুরাম তীর্থে মায় । নচেৎ ইহা সাধু সন্ন্যাসীরাই তীর্থ। বদ্ধমানবাসী জনৈক বাঙ্গালী কায়স্থ তদীয় একটি বিধবা আত্মীয়া সহ গিয়াছিলেন, বোধ হয় তাহারও কাৰ্য্যস্থল আসামেই হইবে। সাধু সন্ন্যাসীর মধ্যে দুই জনের মাত্র বাঙ্গালী বলিয়া পরিচয় পাইয়াছিলাম । একজন কলিকাতার এক সওদাগর অফিসে কাৰ্য্য করিতেন, ম্যালেরিয়ার মারিফতে তাহার পরিবারস্থ সমস্ত ব্যক্তিকে “দেশে” পাঠাইয়া নিশ্চিন্তমনে অতিথিবেশ ধারণ করিয়াছেন ; অপর আজন্ম বিরাগী অল্পবয়স্ক যুবক । উভয়েই ব্ৰাহ্মণ, কয়েক দিন হইতে এক সঙ্গে ভ্ৰমণ করিতেছেন । সত্বরই স্ব স্ব গন্তব্যপথে যাইবার জন্য আবার পৃথক হইবেন । তখন “কা কস্ত পরিবেদনা” । যেখানে জনমানবের বসতি নাই সেই কুণ্ডের তীরে এত জনতা হইয়াছে যে মাথা রাখিবার স্থান পাওয়া দুর্ঘট । কষ্টে স্বষ্টে কুণ্ডের পাশ্বে একটু স্থান করিয়া পড়িয়া রহিলাম। এই স্থানটি কুণ্ডের শীতল জলের সন্নিকট হওয়াতে তখনও অনধিকৃত ছিল ।