পাতা:পরাণ-মন্ডল ও অন্যান্য গল্প - জলধর সেন.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বুঝিয়া একজন প্ৰতিবেশী উত্তর করিল, “বৌমার কথা জিজ্ঞাসা করছি ? পুলিস তঁাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছে।” আমি আবার জ্ঞান হারাইলাম।” এই বলিয়া অতুলবাবু চুপ করিলেন ; আমিও এই লোমহর্ষণ কাহিনী শুনিয়াস্তম্ভিত হইয়া গিয়াছিলাম। আমার কথা বলিবার শক্তি একেৰারে অপহৃত হইয়াছিল। দুই জনেই চুপ করিয়া রহিলাম। * কিছুক্ষণ পরে অতুলবাবু বলিলেন “আমার দুঃখের কথা শুনে আপনার বড় কষ্ট হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি ; কিন্তু একবার ভেবে দেখুন, আমি কি কষ্ট, কি যন্ত্রণা, কি শক্তিশেলের আঘাত পেয়েছিলাম। আপনাকে আর কষ্ট দেব না। অবশিষ্ট কয়েকটি কথা সংক্ষেপেই শেষ করব। তারপর প্রায় দুইমাস ধ’রে মোকৰ্দমা চলল । তিন জন আসামী সেসন সোপর্দ হ’ল। আমার অভাগী স্ত্রী কতকদিন হাসপাতালে, আর কতক দিন পুলিসের জিন্মায় একটি ব্ৰাহ্মণ ইনেস্পেক্টরের বাসায় আশ্রয় পাইল । এই সুদীর্ঘ সময়ের মধ্যে কোন দিন তাহার সহিত নির্জনে সাক্ষাৎ করি নাই। আদালতে যখনই তাহাকে দেখিতাম, তখনই তাহার মলিন মুখ, কাতর দৃষ্টি দেখিয়া আমি যে হৃদয়ে কি যন্ত্রণা অনুভব করিয়াছি, তাহা আপনি বুঝিতে পারেন। কত দিন ইচ্ছা হইয়াছে নিরপরাধা অভাগী দুঃখিনীকে বুকের মধ্যে চাপিয়া ধরিয়া তাহার সন্তপ্ত হৃদয়কে শান্ত করি। কিন্তু তাহ পারি নাই। বুক ফাটিয়া গিয়াছে, অতি কষ্ট্রে অশ্রু সংবরণ করিয়াছি; কিন্তু এই সুদীর্ঘ কালের মধ্যে মুখ ফুটিয়া একটি কথাও বলি নাই-বলিতে পারি নাই। এতই দুৰ্ব্বল-এতই কাপুরুষ আমি তখন ছিলাম ! “তাহার পর বিচার শেষ হইবার দিনের কথা- এ দিনের দৃশ্য আমি জীবনে কখনও ভুলিব না। এ দিনের ঘটনা বলিব কি-ভাবিতেও আমার কষ্ট হয়। সেসনের বিচারে আসামী তিনজনের দশ বৎসর করিয়া እ bbዎ