পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানারকম ঝনঝাট আছে-ঘনিষ্ঠ আতীয়ের বাড়ির মত হলেও সেখানে যখন খুশি বেড়াতে গিয়ে যতক্ষণ খাশি অ্যাডা মেরে এলে চলবে কেন । একালের হিসাবেও বিয়ের বয়স ঘনিয়ে এসেছে । দায়-দায়িত্ব কাজ-কম। তাকে জানতে হবে, বািকতে হবে, শিখতে হবে । সমিতি এসব নিয়ম এসব রীতি নিবিবাদে মেনে চলে । অনর্থক ঝগড়া করে লাভ কি ? আপন হোক পর হোক তার প্রাণের যাতনা সে ছাড়া অন্য কেউ তো বঝবে না। আজ তার মাথা বিগড়ে গেছে । সমীরের মাখ থেকে শোনা প্রেমের স্বাধীনতার ব্যাপারটা তলিয়ে বক্সবার সাধ্য তার নেই। নিজের ভাবে বিভোর হয়ে সমীর অনেক বড় বড় কথা বলেছে~~বড় বড় কথা বলাটা দাঁড়িয়ে গেছে নেশার মত অভ্যাসে। --না বলে তারও উপায় নেই । নিজের মনের মত করে ঢেলে নিয়ে সেজে নিয়ে যেটুকু বঝতে পারবে সেটুকু মেনে নেবার চেষ্টা করতে গেলেই গান্ডগোলের সীমা-পরিসীমা থাকবে না । সমীরকে সে কি ভালবাসে ? সমিতির তা জানা নেই । ওর জন্য কেন তার এত চিন্তা-ভাবনা মায়া-মমতা জেগেছে তাও সমিতি জানে না । রান্না নিয়ে ব্যতিব্যস্ত উমার মা’র সঙ্গে ছাড়া ছাড়া ভাসা ভাসা ভাবে দ'চারটে কথা বলে, কি পরিমাণ তেল মশলা দিয়ে আল কুমড়ার তরকারিটা রান্না করা হচ্ছে--সেটা ठळऊ न्ॐष्ट्र क.: रंथ । মাছ ডিম সমীর খাবে না। এই তরকারিও সে খাবে কিনা কে জানে । উমার মা ছাড়া ছাড়া ভাবে কথা বলে । এক হাতে খন্তি দিয়ে তরকারিটা নড়ে, অন্য হাতে পাখা নেড়ে উনোনের অাঁচ বাড়াবার চেণ্টা চালিয়ে যায়। --মািখ ফিরিয়ে তাকাবার সময় বা উপায় তার নেই। তার সব কথাই হয় ছোট ছোট আলােগা জিজ্ঞাসা-সমিতি এবং তার বাড়ির মানষদের সম্পকে । সমিষ্ট স্পেনং ভরা কণ্ঠস্বত্ব -সমিতি যে নিজে থেকে বাড়ি বয়ে এসে তার রোগা তোতলা ছেলেটার প্রতি দরদ ভাব বজায় রেখেছে, তার সঙ্গে কথা বলার জন্য রান্না ঘরে এসে বসেছে, এজন্য উমার মা'র আনন্দ আর কৃতজ্ঞতার যেন অস্ত নেই । তাকে নিয়ে কি আশা উমার মা’র মনে উকি ঝাঁকি দিয়ে যায়। আজকাল সমিতি সেটা টের পেয়েছে । প্রায় পঙ্গ ও অকমণ্য ছেলেটার জীবনের সঙ্গে যদি গোথে দেওয়া সম্পভব হয়। এই মমতাময়ী মেয়েটির জীবন - “উমার মা সাবস্তির নিঃশ্ববাস ফেলতে পারে। একটি বেী নিয়ে ঘর করবে নিজের সখের হিসাবটাই শােধ, তার নয়, ছেলেটাও তার মায়া-মমতা আদর-যত্ন পাবে। সে চোখ বজলে সমীরের দিকে কে তাকাবে ভেবে বোধ হয়। উমার মা’র রাতে ঘািম হয় না । f