পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনগল বলে যায় এলোমেলো উলেট-পালটা কড়া মিঠে কথা। প্রমোদ অবশ্য কেবল আসনে বসেছিল- সাজানো রকমারি দোকানের খাবার পর্শও করেনি । অপবর মা-ও জানত যে খাবার সে পশ করবে না । প্রমোদ হাঁটু চাপড়ে চড়া গলায় বললে, না না, ওসব কোন ডিফেক্ট আমার মেয়ের নেই। এমনি একটা অসংখ হয়েছিল।--বিষয় রকম অসখি কিন্ত দাঁচার দিনের ব্যাপার । স্পেশালিস্ট দেখলাম-তিন চার শ” টাকা জলে গেল। স্পেশালিস্ট পরিস্কার বললে, কোন গোলমাল নেই, কোন খাত নেই। এরকম স্বাস্থ্য খব কম মেয়ের দেখা যায় ! অপবর মা অপবিভাবে ব্যঙ্গের হাসি হেসেছিল । ঃ বেয়াই, সাবাস্থ্য তো ভালই ছিল তোমার মেয়ের । স্বাস্থ্য এখনো ভাল আছে। নিশ্চয়। নইলে তোমার মেয়েকে দেখেই ছেলে আমার খেপে যায়, তোমার মেয়েকে বিয়ে কয়নেই করবে ! প্রমোদ বঝে উঠতে পারছিল না ব্যাপারটা । বিয়ের পর প্রায় আড়াই বছর স্বামীর অন্ন ধবংস করেও সস্তানের সম্ভাবনার ইঙ্গিতও দিতে পারেনি বলেই কি তবে মাকলকে বিদায় করা হয়নি ? মাকুল বন্ধ্যা নয়—মস্ত ডান্তার একথা স্পষ্ট বলেছে। বিয়ের পর দ’বছর ছেলেমেয়ে হয়নি-সন্তান সম্ভাবনার সচনা শহর হয়নি, এই সনাতন অপরাধেই তবে কি এরা মকলকে ত্যাগ করেনি ? অন্য কোন অপরাধ করেছে মকবুল ? কিন্ত বোঝাপড়া এভাবে চালিয়ে গেলে দিন কেটে যাবে, রাত কেটে যাবে, কোন স্পষ্ট কথায় তারা পৌছতে পারবে না কিছতেই। প্রমোদ তাই কথা পেড়েছিল, এত ভাল মানষ আপনি বেয়ান, এত বোঝেন শোনেন ব্যবস্থা করেন-মেয়েটা কি এমন দোষ করল যে লাথি মেরে তাড়িয়ে দিলেন ? একটু কাজো হয়ে বসেছিল অপবােব মা, ছিলা-কাটা ধনকের মত সে ছিটকে সোজা হয়ে যায় । ঃ লাথি মেরে তাড়িয়ে দিয়েছি ? মেয়েকে জিজ্ঞাসা করবেন বেয়াই। মেয়ে যে আপনার জ্যান্ত ফিরেছে, ওটাকে খান করে পোড়াকপালে ছেলেটা আমার যে ফাঁসি যায়নি, আপনার মেয়েকে বিধবা করেনি- এটাই অনেক কপাল বলে জানবেন বেয়াই { প্রমোদ কি ভেবে এতক্ষণে দটাে একটা মিষ্টি মাখে দিয়ে চুপচাপ গিলেছিল। এক গ্লাস জল এক নিঃস্বাসে শষে নিয়েছিল। ঃ কপাল- সত্যি কপাল। এমন শাশড়ী পেল, এমন স্বামী পেল-তব মেয়েটা মানিয়ে চলতে পারল না ! মািখ বাঁকিয়ে খানিকক্ষণ তার মাখের দিকে চেয়ে থাকে অপবর মা। বলে, জানেন ? ছেলে যদি আপনার মেয়েকে কেটে ফেলত, আমিও বলতাম বেশ করেছিস ।