পাতা:পরিব্রাজকের বক্তৃতা.djvu/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SనR পরিব্রাজকের বস্তৃতা। শরীর দেখিয়া, বুদ্ধি বা অভিজ্ঞতার পরীক্ষা করিয়া সাধু চিনিতে পারা যায় না। সাধনাই সাধুতার মূল। সাধনবিহীন তুমি আমি তাহ কিরূপে বুঝিব। সাধু কতটুকু সাধনায় অগ্রসর হইয়াছেন, কতটুকু সাধন-সিদ্ধির লক্ষণ তাহাতে পরিস্ফুট হইয়াছে, সাধন-ক্ষেত্রের কোন গুঢ় গর্ভে নিভৃত রত্নভাওরের অধিকার সাধু লাভ করিয়াছেন, তাহা দেখিয়া লওয়া অসাধকের সামর্থ-বহির্ভূত। কেবল গোট কতক লম্বী চওড়া জ্ঞানের কথা ছাটিলেই সাধু হওয়া যায় না। সাধুভ ফন্তুনদীর প্রবাহের ন্যায় হৃদয়ের ভিতর দিয়া লোক-লোচনের অতীত স্থান দিয়া প্রবাহিত হইয়। থাকে। যাহার হৃদয় সাধু, তিনিই প্রকৃত সাধু। আজকালের একজন বিখ্যাতনাম। কলিকাতাস্থ পণ্ডিতকে কাশীবাসী জনৈক ব্রাহ্মণ জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন যে, মহাশয়, সাধু কে, তাহ কেমন করিয়া বুঝিব? তাহাতে তিনি নাকি উত্তর দিয়াছিলেন, যাহার কেহ কোন নিন্দ না করে, তিনিই সাধু। আমরা এই উত্তর শুনিয়া হাস্য না করিয়া থাকিতে পারিলাম না । কেন না, এমন কোন সাধু কোন দেশে জন্মগ্রহণ করেন নাই, যাহার কেহ নিন্দ বা নির্যাতন করে নাই। স্বয়ং ভগবানও অবতীর্ণ হইয়া লোক-নিন্দার হন্ত হইতে নিস্তার পান নাই। সাধু সাধুত যুক্ত হইলেও আমার বুদ্ধি ও বিচার-দোষে আমি তাহাকে অসাধু বলিয়। বুঝিলাম, নিন্দা করিলাম। আমি নিন্দ করিলাম বলিয়া কি সাধু অসাধু হইয়। যাইবেন ? যাহার কেহ নিন্দ করে না, তিনি সাধু, ইহা অপসিদ্ধান্ত ; কিন্তু যিনি কাহারও নিন্দ।