বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পলাতকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চিরদিনের দাগা

শৈল যখন ছোটো ছিল একদা মোর বাক্স খুলে দেখি,
হিসাব-লেখা খাতার ’পরে একি
হিজিবিজি কালির আঁচড়! মাথায় যেন পড়ল ক্রোধের বাজ।
বোঝা গেল শৈলরই এই কাজ।
মারা-ধরা গালি-মন্দ কিছুতে তার হয় না কোনো ফল—
হঠাৎ তখন মনে এল শাস্তির কৌশল।
মানা ক’রে দিলেম তারে
তোমার বাড়ি যাওয়া একেবারে।
সবার চেয়ে কঠিন দণ্ড! চুপ করে সে রইল বাক্যহীন
বিদ্রোহিণী বিষম ক্রোধে। অবশেষে বারো দিনের দিন
গরবিনী গর্ব ভেঙে বললে এসে, আমি
আর কখনো করব না দুষ্টামি।
আঁচড়-কাটা সেই হিসাবের খাতা,
সেই কখানা পাতা,
আজকে আমার মুখের পানে চেয়ে আছে তারি চোখের মতো!
হিসাবের সেই অঙ্কগুলার সময় হল গত—
সে শাস্তি নেই, সে দুষ্টু নেই;
রইল শুধু এই
চিরদিনের দাগা
শিশু-হাতের আঁচড় ক’টি আমার বুকে লাগা!’

১৫