বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১১৯
পল্লী-সমাজ


তেমনি শান্ত, মৃদু ও নির্লিপ্তকণ্ঠে বলিয়া উঠিল,—“তোমাকে ভালবাস্‌তাম রমা! আজ আমার মনে হয়, তেমন ভালবাসা বোধ করি, কেউ কখনো বাসেনি; ছেলেবেলায় মা’র মুখে শুন্‌তাম, আমাদের বিয়ে হ’বে। তার পরে, যে দিন সমস্ত আশা ভেঙ্গে গেল, সে দিন আমি কেঁদে ফেলেছিলাম, আজও আমার তা’ মনে পড়ে।” কথাগুলা জ্বলন্ত সীসার মত রমার দুই কানের মধ্যে প্রবেশ করিয়া দগ্ধ করিয়া ফেলিতে লাগিল; এবং একান্ত অপরিচিত অনুভূতির অসহ্য, তীব্র বেদনায় তাহার বুকের একপ্রান্ত হইতে অপরপ্রান্ত পর্য্যন্ত কাটিয়া কুচি-কুচি করিয়া দিতে লাগিল। কিন্তু, নিষেধ করিবার কোন উপায় খুঁজিয়া না পাইয়া নিতান্ত নিরুপায় পাথরের মূর্ত্তির মত স্তব্ধ হইয়া বসিয়া, রমা রমেশের বিষাক্ত-মধুর কথাগুলো একটির পর একটি ক্রমান্বয়ে শুনিয়া যাইতে লাগিল। রমেশ কহিতে লাগিল,—“তুমি ভাব্‌চ, তোমাকে এ সব কাহিনী শোনানো অন্যায়! আমার মনেও সেই সন্দেহ ছিল ব’লেই সে দিন তারকেশ্বরে যখন একটি দিনের যত্নে আমার সমস্ত জীবনের ধারা বদ্‌লে দিয়ে গেলে, তখনও চুপ ক’রে ছিলাম। কিন্তু, সে চুপ ক’রে থাকাটা আমার পক্ষে সহজ ছিল না।” রমা কিছুতেই আর সহ্য করিতে পারিল না। কহিল,—“তবে,—আজকেই বা বাড়ীতে পেয়ে আমাকে অপমান কর্‌চেন কেন?” রমেশ কহিল,—“অপমান! কিছু না। এর মধ্যে মান-অপমানের কোন কথাই নেই। এ যাদের কথা হ’চ্চে, সে