আসিয়া দাঁড়াইয়াছিল। সে আস্তে আস্তে বলিল, “কথাটা ঠিক বাবু।” রমেশ তাহারও কোন জবাব দিল না, শুধু হাত নাড়িয়া ভজুয়াকে তাহার নিজের কাজে যাইতে আদেশ করিয়া নিজেও নিঃশব্দে ঘরে চলিয়া গেল। তাহার হৃদয়ের মধ্যে যে কি ভীষণ ঝঞ্ঝার আকারেই এই ভৈরব আচার্য্যের অপরিসীম ভীতি ও কাতরোক্তি প্রবাহিত হইতে লাগিল, তাহা শুধু অন্তর্য্যামীই দেখিলেন।
“হাঁরে যতীন্, খেলা কর্ছিস, ইস্কুলে যাবিনে?” “আমাদের যে আজ কাল দু’দিন ছুটি দিদি!” মাসী শুনিতে পাইয়া কুৎসিত মুখ আরও বিশ্রী করিয়া বলিলেন, “মুখপোড়া ইস্কুলের মাসের মধ্যে পনরদিন ছুটি! তুই তাই ওর পিছনে টাকা খরচ করিস্, আমি হ’লে আগুন ধরিয়ে দিতুম।” বলিয়া নিজের কাজে চলিয়া গেলেন। ষোল-আনা মিথ্যাবাদিনী বলিয়া যাহারা মাসীর অখ্যাতি প্রচার করিত, তাহারা ভুল করিত। এম্নি এক-আধটা সত্যকথা বলিতেও তিনি পারিতেন এবং আবশ্যক হইলে করিতেও পশ্চাৎপদ হইতেন না। রমা ছোট ভাইটিকে কাছে টানিয়া লইয়া, আস্তে আস্তে জিজ্ঞাসা করিল, “ছুটি কেন রে, যতীন্?” যতীন দিদির কোল ঘেঁসিয়া দাঁড়াইয়া কহিল, “আমাদের ইস্কুলের চাল ছাওয়া হচ্চে যে! তারপর চুণকাম হবে—কত বই এসেচে, চারপাঁচটা চেয়ার-টেবিল, একটা