বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯৫
পল্লী-সমাজ


উঠিয়া চলিয়া গেল। সেখানে নির্জ্জন ঘরের মধ্যে তাহার দুই চক্ষু বাহিয়া বড় বড় অশ্রুর ফোঁটা টপ্‌-টপ্‌ করিয়া ঝরিয়া পড়িতে লাগিল।


১১

 দুইদিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টিপাত হইয়া অপরাহ্ন-বেলায় একটু ধরণ হইয়াছে। চণ্ডীমণ্ডপে গোপাল সরকারের কাছে বসিয়া রমেশ জমীদারীর হিসাবপত্র দেখিতেছিল; অকস্মাৎ প্রায় কুড়িজন কৃষক আসিয়া কাঁদিয়া পড়িল—“ছোটবাবু, এ যাত্রা রক্ষে করুন, আপনি না বাঁচালে ছেলেপুলের হাত ধ’রে আমাদের পথে ভিক্ষে কর্‌তে হবে।” রমেশ অবাক্‌ হইয়া কহিল, “ব্যাপার কি?” চাষীরা কহিল,—“একশ-বিঘের মাঠ ডুবে গেল, জল বা’র ক’রে না দিলে সমস্ত ধান নষ্ট হয়ে যাবে বাবু, গাঁয়ে একটা ঘরও খেতে পাবে না!” কথাটা রমেশ বুঝিতে পারিল না। গোপাল সরকার তাহাদের দুই একটা প্রশ্ন করিয়া, ব্যাপারটা রমেশকে বুঝাইয়া দিল। একশ-বিঘার মাঠটাই এ গ্রামের একমাত্র ভরসা। সমস্ত চাষীদেরই কিছু কিছু জমি তাহাতে আছে। ইহার পূর্ব্বধারে সরকারী প্রকাণ্ড বাঁধ, পশ্চিম ও উত্তর ধারে উচ্চ গ্রাম, শুধু দক্ষিণধারের বাঁধটা ঘোষাল ও মুখুয্যেদের। এই দিক্‌ দিয়া জল-নিকাশ করা যায় বটে, কিন্তু বাঁধের গায়ে একটা জলার মত আছে। বৎসরে দু’শ টাকার মাছ বিক্রী হয় বলিয়া জমিদার বেণীবাবু তাহা