পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সোণার চুড়ী

 এ চিঠি লইয়া কি করিবে সে? ছিঁড়িয়া ফেলিবে, না স্বামীকে দেখাইবে? অমলা ভাবিতে লাগিল!

 অমলাদের বাড়ীর সুমুখে একটা রাস্তা। ওপারে, ঠিক সাম্‌নাসাম্‌নি একখানা মস্ত বাড়ী। পল্লীগ্রামের কোন ধনী জমিদার মাসখানেক হইল, ওই বাড়ীখানা ভাড়া লইয়াছেন।

 অমলার দৃষ্টি আচম্কা সেই বাড়ীর ছাদের উপরে পড়িল।

 সেদিকে চাহিয়াই, মাথায় ঘোমটা টানিয়া অমলা তাড়াতাড়ি ছাদ হইতে নামিয়া গেল।

 সে বাড়ীর ছাদের উপরে এক সুশ্রী যুবা, নিষ্পলকনেত্রে হাস্যমুখে অমলার দিকে তাকাইয়া, নিষ্পন্দভাবে দাঁড়াইয়া ছিল।

 যাইবার সময়ে অমলা, চিঠিখানা রাস্তায় ছুঁড়িয়া ফেলিয়া দিয়া গেল।

 কিন্তু, স্বামীকে সে কোনকথা বলিল না।


 অমলা, কয়দিন আর ছাদে উঠে নাই।

 সেদিন বৈকালে সে রুটি সেঁকিতেছিল আর তাহার ঠিকা ঝী রুটি বেলিয়া দিতেছিল।

 বেলিতে-বেলিতে ঝী বলিল, “একটু হাত চালিয়ে নাও দিদিমণি!”

 অমলা বলিল, “ক্যান্ লা, তোর এত তাড়াতাড়ি কিসের বল্তো?”

 ঝী বলিল, “এই মাগ্যির বাজারে এক জায়গায় ঠিকে কাজ করে তো পেট চলেনা দিদি! কাজেই আর এক জায়গায় কাজ না কর্‌লে পোষায় না।”

১৩৫