পাতা:পসরা - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পসরা

একবার সেটা পরখ্‌ করিয়া দেখিবার সাধ হইল,—কিন্তু সাহসে কুলাইল না। যদি কেহ দেখিতে পায়!

 বাক্সের ভিতরে ওটা কি? চিঠি বুঝি?—হুঁ, তাই বটে!

 অমলা চিঠিখানা খুলিয়া পড়িলঃ-

 “সামান্য উপহার পাঠালুম, না নিলে আমার কষ্ট হবে। পরে আরও পাঠাব, আমার কাছে এলে তুমি যা চাও তাই দেব। এখনও কি তুমি আমায় দয়া করবে না? স্বপ্নে আমি তোমাকে দেখি, তোমা বই আমি আর কিছু জানি না। আর চুপ করে থেকো না, চিঠির উত্তর দিও। উত্তর না পেলে আমি আত্মহত্যা কর্‌ব।”

 আবার উত্তর চায়! উত্তর? হাঁ, উত্তর না পেলে আত্মহত্যা কর্‌বে!

 আচ্ছা, মানুষটা যদি উত্তর পেলেই তুষ্ট হয়, তাহলে দু-লাইন লিখ্‌তে দোষ কি? তাতে কি পাপ হবে? অমলা আপনাকে আপনি প্রবোধ দিয়া বলিল, না, পাপ আর কি? সেত অন্য কিছু করিতেছে না—সুধু দু-লাইন উত্তর দিতেছে। কিন্তু না,—সে পরস্ত্রী হইয়া পরপুরুষকে কি কথা লিখিবে? তাহার লিখিবার কথা কি আছে?

 হালভাঙ্গা নৌকার মত অমলার মন, তাহার বুকের ভিতর দোলা খাইতে লাগিল। কি যে করিবে, কিছুই সে ঠিক করিতে পারিল না। নৌকা যখন এমনি লক্ষ্যহীন, তখন সে সহজেই ডুবুডুবু হয়।

 গহনাগুলা যেন অমলাকে আপনাদের মৌন ভাষায় ডাক্ দিয়া বলিতেছিল, “ওগো রাণি, আমাদের প্রতি বিমুখ হয়োনা—তোমার দেহখানিকে সুন্দর কর্‌তে পারলেই আমাদের জীবন সার্থক হবে! তোমার ঐ পেলব শুভ্র কণ্ঠ, বাহু ও হস্তের স্পর্শ পেলে আমরা ধন্য হয়ে যাব!”

১৪৬