পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় ভাগ
১০১

আদেশ প্রচার করান যে, কোনও কীটভুক্ পাখীকে ধরিলে বা মারিলে কিম্বা তাহার ডিম্ব নষ্ট করিলে, শাস্তি পাইতে হইবে। এইখানে বলা আবশ্যক যে, বকজাতীয় পক্ষী তুলার পোকা (cotton worm) খাইয়া ফেলে; অথচ এই বকের পতত্রের লোভে মিশরের লোকে ইহার প্রাণসংহার করিত। আমাদের দেশে বড় বড় নদীর বাঁধ অনেক সময়ে শঙ্খশম্বুকাদির দ্বারা জখম হইবার সম্ভাবনা থাকে। এস্থলেও ঐ বকজাতীয় পাখী সেই সকল বাঁধগুলিকে শম্বুকাদির কবল হইতে রক্ষা করিয়া থাকে।

 কৃষিবিভাগের কিম্বা পূর্ত্তবিভাগের দিক্ দিয়া দেখিলে, পাখীর আবশ্যকতা যে কত বেশী, তাহা বোধ হয় কতকটা বুঝাইতে চেষ্টা করিয়াছি। কিন্তু পক্ষী সম্বন্ধে ষ্টেটের দায়িত্ব যে এইখানেই পর্য্যবসিত হইল, তাহা মনে করিলে ভুল হইবে। বন জঙ্গল ভাল করিয়া রক্ষা করা ষ্টেটের প্রধান কর্ত্তব্যের মধ্যে গণ্য। নানা কারণে বৈজ্ঞানিকগণ স্থির করিয়াছেন যে, দেশের শুভাশুভ অনেকটা বনস্পতির উপর নির্ভর করে। অতএব ষ্টেটের দেখা উচিত যে, কোন রকমে দেশের বড় বড় বনগুলির অনিষ্ট না হয়। সেই জন্য বন জঙ্গলের রক্ষণাবেক্ষণের ভার সরকারি কর্ত্তৃপক্ষকে লইতে হইয়াছে; দেশের শাসনতন্ত্রের মধ্যে Forestry নিতান্ত নগণ্য বিভাগ নহে। ভূয়োদর্শনের ফলে ইহা প্রতিপন্ন হইয়াছে যে, অযাচিতভাবে পাখীর সাহায্য পাইয়া বনগুলিকে বিলাশের হাত হইতে রক্ষা করা হইয়াছে। যখনই কোনও কারণে বিশেষ বিশেষ উপকারী পাখীর অভাব ঘটে, তখনই দেখা গিয়াছে যে, অন্যান্য অনর্থের মধ্যে বনস্পতির ক্ষয় বিষম মারাত্মক হইয়া উঠে। পাখীর সহিত বনস্পতির এই সম্পর্কের মূলে কতকগুলা দুষ্ট কীট রহিয়াছে; সেই কীটগুলাই অলক্ষ্যে গাছপালার শনি হইয়া দাঁড়ায়। এমন কি, গাছের গুঁড়ি ফুটা করিয়া বৃহৎ কাণ্ডটাকে ফোঁপ্‌রা করিয়া ফেলে। আমাদের কথাসাহিত্যে সেই