পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৮
পাখীর কথা

ধূনন্তি পক্ষপবনৈর্ন নভো বলাকাঃ
পশ্যন্তি নোম্নতমুখা গগনং ময়ূরাঃ।

বলাকাগণ পক্ষপবনের দ্বারা নভোমণ্ডল কম্পিত করে না; ময়ূরগণ উন্নতমুখ হইয়া গগনকে নিরীক্ষণ করে না।

 শিখিগণ এখন আর নৃত্য করে না,—“নৃত্যপ্রয়োগরহিতাশ্ছিখিনঃ।”

 বর্ষাপগমে ইহাদের স্বভাবের পরিবর্ত্তন হইয়াছে বটে কিন্তু ইহারা যাযাবর নহে; সমস্ত বৎসর ইহাদিগকে দেখিতে পাওয়া যায়। সঙ্গিহীন অবস্থায় বকজাতীয় পাখীগুলি নানা স্থানে বিচরণ করিতে থাকে; বর্ষাকালে তাহারা কেমন শ্রেণীবদ্ধ হইয়া আকাশমার্গে উড্ডীয়মান হয়, মেঘদূতের কবি তাহা দেখাইয়াছেন। শরৎকালে আর তাহারা ঝাঁকে ঝাঁকে পক্ষবিস্তার করিয়া উড়িতে চায় না। হেমন্তে ও শিশিরে বকপরিবারস্থ ক্রৌঞ্চের কণ্ঠস্বর সীমান্তরকে ধ্বনিত করিয়া তুলে। সাধারণ বকের বৈজ্ঞানিক পরিচয় অন্যত্র দিয়াছি, কিন্তু এই ক্রৌঞ্চটি বিহঙ্গতত্ত্বজ্ঞের নিকটে ardeola grayi বা Pond heron নামে পরিজ্ঞাত। বাঙ্গালায় ইহা কোঁচবক বলিয়া খ্যাত। সুশ্রূত-সংহিতারক্রৌঞ্চ টীকাকার ডল্লনাচার্য্য মিশ্র ক্রৌঞ্চ অর্থে লিখিতেছেন—ক্রৌঞ্চির কোঁচবক ইতি লোকে। হেমন্তে শস্যবহুল প্রান্তরে ইহার মধুর নাদ শ্রুত হইয়া থাকে—

প্রভূতশালিপ্রসবৈশ্চিতানি
মৃগাঙ্গনাযূথবিভূষিতানি।
মনোহরক্রৌঞ্চনিনাদিতানি
সীমান্তরাণ্যুৎসুকয়ন্তি চেতঃ॥

শিশিরে প্রভূত শালিধান্যের মধ্য হইতে ইহার কণ্ঠস্বর ক্বচিৎ নির্গত হইয়া যেন শীতঋতুর আগমনবার্ত্তা প্রচার করিতেছে। তাই ঋতু-