পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/৩০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৬
পাখীর কথা

“ধূসরস্তু সিতঃ পীতলেশবান্ বকুলচ্ছবিঃ”। আবার, “ধূসর স্তোকপুণ্ডুরঃ,—ইতি অভিধানরত্নমালা। দেখা যাইতেছে যে, ধূসর ঈষৎ পাণ্ডুবর্ণ অথবা পীতলেশবান্ সিতবর্ণকে বুঝায়। এই সিতবর্ণ যে নিছক শুভ্র বা শ্বেতবর্ণ নহে, সে সম্বন্ধে পূর্ব্বে বিশদভাবে আলোচনা করিয়াছি; কোথাও বা শ্বেতের সহিত পীত, কোথাও বা অন্য কোনও বর্ণ অল্পবিস্তর মিশিয়া যায়। শ্যেন-গৃধ্রের বর্ণনায় পাশ্চাত্য পক্ষিতত্ত্ববিৎ whitish, brownish, black-tipped, ferruginous, rufous প্রভৃতি আখ্যায় এই সিতবর্ণের তারতম্য বুঝাইবার চেষ্টা করিয়াছেন।

 কবিবর্ণিত বিহঙ্গগুলি সম্বন্ধে আপাততঃ আমার বক্তব্য প্রায় শেষ হইয়া আসিল। রঘুবংশে যে মঞ্জুবাক্ পিঞ্জরস্থ শুককে দেখিতে পাই যে চাতককে নির্গলিতাম্বুগর্ভ শরদ্‌ঘন প্রলুব্ধ করিতে পারিতেছে না; যে বর্হিকে আবাসবৃক্ষোন্মুখ হইয়া বনভূমিকে শ্যামায়মান করিতে দেখা যায়; এবং কুমারসম্ভবে অভিজাতবাক্ গৌরীর কণ্ঠস্বর যে অন্যপুষ্টার কণ্ঠস্বরকেও প্রতিকূল ও কর্ক্কশ করিয়া তুলিয়াছে; ও চূতাঙ্কুরাস্বাদকষায়কণ্ঠ পুংস্কোকিলের মধুর কণ্ঠস্বর স্মরের বচন বলিয়া মনে হয়; তাহাদের জাতি, বর্ণ ও প্রকৃতিগত অনেক কথা পূর্ব্বে আলোচনা করিয়াছি। সেই আলোচনার সহিত এই সকল বর্ণনার কিছুমাত্র বিরোধ নাই। এমন কিছু নূতন কথাও আসিয়া পড়িতেছে না যে, আবার প্রসঙ্গক্রমে কিছু বলা আবশ্যক হয়।

 শৃঙ্গারতিলকে একটি নূতন পাখী পাওয়া যায়;—“একোহি খঞ্জনবরো নলিনীদলস্থঃ”। এই যে পদ্মপত্রের উপরখঞ্জন খঞ্জন পাখী রহিয়াছে, ইহার ইংরাজি নাম wagtail। জলাশয়ের নিকটে ইহারা প্রায়ই বিচরণ করে। মিঃ ওট্‌স্ লিখিয়াছেন—“They (wagtails) freqnent open land, fields and the banks of rivers and ponds, some of the