পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
পাখীর কথা

বোধে উহাদিগকে একত্র রাখিতে অনিচ্ছুক। ইহা তাঁহাদিগের ভুল ধারণা মাত্র। স্বভাব এবং অবয়বের সামঞ্জস্যের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া এই দুই জাতীয় বিহঙ্গগণের একত্র সংরক্ষণ দোষাবহ নহে; কারণ সচরাচর বীজাণুভোজী পাখীকে কীট-পতঙ্গও ভক্ষণ করিতে দেখা যায়; এবং পক্ষিগৃহমধ্যস্থ কীটপতঙ্গপ্রিয় বিহঙ্গগণের নিমিত্ত যে সমস্ত কৃত্রিম খাদ্য প্রদত্ত হয়, তাহা যে বীজাণুভোজী পক্ষিসমূহের পক্ষে হিতকর, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। বস্তুতঃ ইহা তাহাদিগের সবিশেষ পুষ্টিসাধন করিয়া থাকে। টিয়া (parrot) জাতীয় বিহঙ্গগণের চঞ্চুপুট স্বভাবতঃ অতিশয় সবল এবং তীক্ষ্ণ; ইহার আঘাতে অপর পক্ষী সহজে ক্লিষ্ট ও আহত হইয়া পড়ে। এই নিমিত্ত উহাদিগকে স্বতন্ত্র গৃহে রক্ষা করা সঙ্গত।

 একত্র সমাবেশকালে পাখীগুলির স্বভাব এবং দেহের আয়তনের প্রতি পালকের যেরূপ লক্ষ্য রাখা উচিত, তদ্রূপ তুল্যপ্রকৃতি ও সমান আকারের নির্ব্বাচিত পক্ষী বা পক্ষিমিথুনগুলিকে গৃহমধ্যে ছাড়িয়া দিয়া তাহাদিগের পরস্পর আচরণ প্রত্যক্ষ করা তাঁহার একটি অবশ্যকর্ত্তব্য কর্ম্ম; কারণ এই প্রকারে তিনি ভাবী বিপদ্‌পাত প্রতীকারের অবসর পাইয়া থাকেন। অনেক সময়ে দেখা গিয়াছে যে, পাখীগুলির স্বভাব বা শ্রেণীগত কোন প্রকার দোষ না থাকিলেও শ্রেণীমধ্যস্থ কোন এক বিশিষ্ট পক্ষীর অচিরণ অকারণ রূঢ় হইয়া থাকে। দৃষ্টান্ত স্বরূপ, সুকোমল-স্বভাব বুলবুলজাতীয় পক্ষিগণের মধ্যেও কোন কোনটির বিদ্বেষপ্রিয়তা লক্ষিত হয়। মানবগণের মধ্যেও এরূপ দৃষ্টান্তের অসদ্ভাব নাই।একত্র সমাবেশে বাধা এইরূপ স্থলে রূঢ়-প্রকৃতি পাখীটিকে অবিলম্বে গৃহ হইতে বহিষ্কৃত করা কর্ত্তব্য; নচেৎ অন্যান্য প্রকৃতি-কোমল পক্ষিসমূহ যে ইহার দ্বারা আহত কিংবা ইহার সংস্রবে থাকিয়া স্বভাব-দুষ্ট হইবে, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। বীজাণুভোজী ফিঞ্চজাতীয় (finch family) বিভিন্ন শ্রেণীর পক্ষিগণকে একত্র কিংবা অপর জাতীয় তুল্যাবয়ব এবং সমানপ্রকৃতি বিহঙ্গগণের