পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
গ্রোশ্যাস।

 গ্রোশ্যাস সন্নিহিত নগরবর্ত্তী বস্তুবর্গের নিকট হইতে পাঠার্থ পুস্তুকানয়নের অনুমতি পাইয়াছিলেন। পাঠসমাপ্তির পর সেই সকল পুস্তক করণ্ডকমধ্যগত করিয়া প্রতিপ্রেরিত হইত। ঐ সমভিব্যাহারে তাহার মলিন বস্ত্রও ক্ষালনার্থে রজকালয়ে যাইত। প্রথমতঃ রক্ষকেরা তন্ন তন্ন করিয়া ঐ করগুকের বিষয়ে অনুসন্ধান করিত; কিন্তু কোন বাৱেই সন্দেহোদ্বোধক বস্তু দৃষ্টিগোচর না হওয়াতে ক্রমে ক্রমে শিথিল প্রযত্ন হয়। গ্রোশ্যাসের পত্নী, রক্ষিগণের ক্রমে ক্রমে এইরূপ শৈথিল্য ও অযত্ন প্রাদুর্ভাব দেখিয়া, পতিকে সেই করণ্ডকমধাগত করিয়া স্থানান্তরিত করিবার উপায় কল্পনা করিতে লাগিলেন। বায়ু, প্রবেশার্খে তাহাতে কতিপয় ছিদ্র প্রস্কৃত করলেন এবং গ্রোশ্যাস এইরূপ সংক্ষিপ্ত স্থানের মধ্যে রুদ্ধ হইয়া কতক্ষণ পর্যন্ত থাকতে পারেন ইহাও পরীক্ষা করিতে লার্গিলেন। অনন্তর এক দিবস দুর্গাধ্যক্ষের অসন্নিধানরূপ সুযোগ দেখিয়া তাঁহার সহধর্ম্মিণীর নিকট গিয়া নিবেদন করিলেন আমার স্বামী অত্যধিক অধ্যয়নদ্বারা শরীরপাত করিতেছেন; অতএব আমি রাশীকৃত সমুদায় পুস্তক এককালে ফিরিয়া দিতে বাসনা করি।

 এইরূপ প্রার্থনাদ্বরা তাঁহার সম্মতি লাভ হইলে, নিরূপিত সময়ে গ্রোশ্যাস করণ্ডকমধ্যে প্রবেশ করিলেন। অনন্তর দুই জন সৈনিকপুরুষ অধিরোহণী দ্বারা অতি কষ্টে করণ্ড ক অবতীর্ণ করিল। ঐ করণ্ডক সমধিকভারাক্রান্ত দেখিয়া তাহাদিগের অন্যতর পরিহাস পূর্ব্বক কহিল ভাই! ইহার ভিতরে অবশ্যই এক আর্ম্মিনিয় আছে। গ্রোশ্যাসের পত্নী অব্যাকুল চিত্তে উত্তর করিলেন হাঁ ইহার মধ্যে কতকগুলি আর্ম্মিনিয় পুস্তক আছে বটে। যাহা হউক, সৈনিকপুরুষ করণ্ডকের অসম্ভব ভার দর্শনে সন্দিহান হইয়া উচিতবোধে অধ্যক্ষপত্নীর গোচর করিল। কিন্তু