পাতা:পাঠমালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পঞ্চম অঙ্ক।

 এক দিন রাত দুম্ভ, রাজকার্যসমাধান্তে একান্তে অসান হইয়া, প্রিয়বয়স। মাধবের সহিত কথোপকথনরসে কাল যাপন করিতেছেন, এমন সময়ে হংসপদিকা নামে এক পরিচারিণী সঙ্গীতশালায় অতি মধুৰ স্বরে এই ভাবের গান করিতে লাগিল “ওহে মধুকর! অভিনবমধুলোতে সহকাররীতে তখন তাদৃশ প্রণয় প্রদর্শন করিয়া এখন, কমলমধুপানে পরিতৃপ্ত হইয়া, উহাকে একবারে বিস্মৃত হইলে কেন”?

 হংসপদিকার গীত শ্রবণ কবিয়া রাজা অকস্মাৎ যৎপরোনাস্তি উন্মনাঃ হইলেন। কিন্তু কি নিমিত্ত উষ্মনাঃ হইতেছেন তাহার কিছুই অনুধাবন করতে না পারি, মনে মনে কহিতে লাগিলেন কেন এই মনোহর গীত শ্রবণ করিয়া মন এমন আকুল হইতেছে? প্রিয়জনবিরহ ব্যতিরেকে মনের এরূপ আকুলতা হয় না; কিন্তু প্রিয়বিরহও উপস্থিত দেখিতেছি না; অথবা মনুষ্য, সর্ব্বপ্রকারে সুখী হইয়াও, রময় বস্তু দর্শন কিংবা মনোহর গীত শ্রবণ করিয়া যে অকস্মাৎ তাকুল হৃদয় হয়, বোধ করি, অনতিপরিস্ক ট রূপে জন্মান্তরীণ স্থির সৌহৃদ্য তাহার স্মৃতিপথে আরূঢ় হয়।

 রাজা মনে মনে এই বিতর্ক করিতেছেন এমন সময়ে কী আসিয়া কৃতাঞ্জলিপুটে নিবেদন করিল মহারাজ! ধৰ্মারণবার্মী তপস্বীরা মহর্ষি কণের সন্দেশ লইয়া আসিয়াছেন, কি আজ্ঞা হয়। রাজা তপস্বিনাম শ্রবণমাত্র অতিমাত্র আদর প্রদর্শন পূর্বক কহিলেন শীঘ্র উপাধ্যায় সোমরাতকে বল, অভ্যাগত তপস্বীদিকে, বেদবিধি অনুসারে সংকার করিয়া, স্বয়ং সমভিব্যাহারে