তিনি সাতিশয় শঙ্কিত হইয়া গোতমীকে কহিলেন পিসি! আমার ডান চোখ নাচিতেছে কেন? গোতমী কহিলেন বৎস্যে! শঙ্কিতা হইও না; পতিকুলদেবতারা তোমার মঙ্গল করিবেন। যাহা হউক, শকুন্তলা তদবধি মনে মনে নানা প্রকার আশঙ্কা করিতে লাগিলেন ও অত্যন্ত ব্যাকুল হইলেন।
রাজা শকুন্তলাকে দেখিয়া কহিতে লাগিলেন এই অবগুণ্ঠনবতী কামিনী কে? কি নিমিত্তই বা ইনি তপস্বীদিগের সমভিব্যাহারে আসিয়াছেন। পাশ্ববর্তিনী পরিচারিকা কহিল মহারাজ! আমিও দেখিয়া অবধি নানা বিতর্ক করতেছি, কিন্তু কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। যা হউক, মহারাজ! এরূপ রূপ লাবণ্যের মাধুরী কখন কাহার ময়নগোচর হয় নাই! রাজা কহিলেন সে যা হউক পরীতে দৃষ্টিপাত করা কর্ত্তব্য নহে। এ দিকে শকুন্তলা আপনার অস্থির হৃদয়কে এই বলিয়া সানা করিতে লাগিলেন হৃদয়! এত আকুল হইতেছ কেন? আপুত্রের ভাব মনে করিয়া আশ্বাসিত ইও ও ধৈয্য অবলম্বন কর।
তাপসেরা ক্রমে ক্রমে সন্নিহিত হইয়া, মহারাজের জয় হউক বলিয়া, হস্তু তুলিয়া আশীৰ্বাদ করিলেন। রাজা প্রণাম করিয়া ঋষিদিগকে আসন পরিগ্রহ কবিতে কহিলেন। অনন্তর সকলে উপবেশন কৰিলে রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন কেমন, নির্বিঘ্নে তপস্যা সম্পন্ন হইতেছে? ঋষিরা কহিলেন মহারাজ! আপনি রক্ষাক। থাকিতে ধর্ম্মক্রিয়ার বিঘ্ন সম্ভাবনা কোথায়? সূর্যদেবের উদয় হইলে কি অন্ধকারের আভির্ভাব হইতে পারে? রাজা শুনিয়া কৃতার্থর্ম্মন্য হইয়া কহিলেন অদ্য আমার রাজশব্দ সার্থক হইল। পরে জিজ্ঞাসা করিলেন ভগবান্ কণের কুশল? ঋষিরা কহিলেন হুঁ মহারাজ! মহর্ষি সৰ্বাংশেই কুশলী।
এইরূপে প্রথমসমাগমমাচিত শিষ্টাচারপরম্পরা পরিসমাপ্ত