পাতা:পাতঞ্জল দর্শন.djvu/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 . পাতঞ্জল দর্শন। [ পা ১ । সূ১৭ ] ভক্তভাবুকগণ স্পষ্টই বুঝিতে পারিবেন পূজা প্রভৃতি যোগের উপায় হইতে পৃথক নহে, অষ্টাঙ্গ যোগের কথা সন্ধ্যা পূজার পদে পদে অন্তর্নিবিষ্ট রহিয়াছে। এ বিষয় বিশেষ করিয়া বুঝাইতে হইলে স্বতন্ত্র একখানি পুস্তক লিখিবার প্রয়োজন, অতিবিস্তৃত হইবে বলিয়া এস্থানে পরিত্যক্ত হইল। উচ্চ প্রাসাদে আরোহণ করিতে হইলে সোপান পরম্পরার প্রয়োজন, লম্ফপ্রদান পূর্বক একেবারে উপরে উঠা যায় না, তাহাতে ফললাভ দূরে থাকুক পদে পদে বিপত্তিরই সম্ভাবনা। ধৰ্ম্মানুষ্ঠানে প্রবৃত্তি থাকিলে, চিত্ত স্থির করিতে বাসনা থাকিলে বাহ পূজার (পৌত্তলিকতার ) প্রতি বিদ্বেষ করা উচিত নহে, সকল শাস্ত্রেই উপদেশ প্রদান করিতেছে, স্থল বিষয় গ্রহণ করিতে পারিলে ক্রমশঃ স্বক্ষ, স্বল্পতর, স্বক্ষতম, বা পরিশেষে নিরালম্বনেও চিত্ত অবস্থান করিতে পারে। অনেকের আপত্তি হইতে পারে, তৃণ মৃত্তিকানিৰ্ম্মিত পুত্তলিকায় দেবত্ব আরোপ করিয়া পূজা করা অজ্ঞানের কার্য্য, জ্ঞান লাভ করিতে গিয়া অজ্ঞানের আশ্রয় করার প্রয়োজন কি ? আরোপ তাহাতে সন্দেহ নাই, ঐ উপাসনও কি আরোপ নহে? যদি উপাসনাই আরোপ হইল, তবে আর উপাসনার বিষয়ে আপত্তি কেন ? প্রতিমাতে দেবতার আরোপ হয়, কিন্তু এই প্রতিমা পূজাতেই “তত্বমসি, অহং ব্ৰহ্মাস্মি” প্রভৃতি মহা বাক্যের অনুসারেই “সোহহং, দেবীরূপমাত্মানং বিচিন্তা” ইত্যাদি সমস্তই বিহিত আছে। গীতার “ব্রহ্মাৰ্পণং ব্ৰহ্মহবিঃ” প্রভৃতি স্থানে তান্ত্রিক পূজার অন্তে “* * * তৎসৰ্ব্বং ব্ৰহ্মাপণমস্ত” এইরূপ আধ্যাত্মিক সকল কথাই প্রতিমা পূজায় নিবিষ্ট আছে, অনুসন্ধান থাকিলেই জানা যাইতে পারে। সাকার প্রতিমা পূজার চরম লক্ষ্য ব্ৰহ্মজ্ঞান, ব্ৰহ্মজ্ঞানের উপায় সাকার পূজা উপাসনা, সাকার উপাসনা হইতেই নিরাকার জ্ঞান হয়, পরস্পরই পরস্পরের সাপেক্ষ, বিদ্বেষের কোনই কারণ নাই, সাকার সম্প্রদায় নিরাকারের এবং নিরাকার সম্প্রদায় সাকারের বিদ্বেষী কেন হয় তাহা বুঝা যায় না, এটা কেবল একওঁয়ে গোড়ামীরই ফল, আপন আপন শক্তির দিকে দৃষ্টি রাখিয়া ধৰ্ম্মপথে অতিমানশূন্ত হইয়া বিচরণ করিলে কোনই বিদ্বেষ থাকে না। , দেহাত্মবাদী ঘোর নাস্তিকের প্রতি কিছুই বলা যাইতেছে না, যাঁহাদের পরকালে বিশ্বাস আছে, চিত্তের উন্নতিতে অভিলাষ আছে, অথচ আপন