পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এসব কথা পছন্দ হয় না। ভূপেশের, তার হিসাবে কোন মানেই হয় না। এসব যুক্তি তর্কের। তর্ক বন্ধ করে সে গজর গজর করতে থাকে। অঘোরের আপিসে চাকরী করার সময়েও নানাদিকে টানাটানি ছিল কিন্তু সেই আয়টা বন্ধ হবার পর এখন ভাল করেই টের পাওয়া যাচ্ছে অনটন কাকে বলে ছেলের খামখেয়ালে এই বয়সে এমন কঠিন অবস্থায় পড়ায় গা জ্বালা করে ভূপেশ এবং গৌরীর। গৌরী উঠতে বসতে নিজের পোড়া অদৃষ্টকে অভিশাপ দেয় । আল্পনা মাঝে মাঝে বুঝিয়ে তার গায়ের জ্বালা কমাবার চেষ্টা করে। অভাবের জ্বালা তার নিজের যদিও মোটেই কম নয়। বলে, তুমি এই সোজা কথাটা বুঝতে পার না মা ? পরে অনেক উন্নতি করবে বলেই তো দুভাই দু’দিন একটু কষ্ট করছে। একটা ইংরাজী খবরের কাগজ ভাল করে চললে কত লাভ হয় হিসেব আছে তোমার ? সাময়িকভাবে কথাটা মনে লাগে না গৌরীর এমন নয়, কিন্তু বেশীক্ষণ কথাটা তার মনে থাকে না । আবার সে অদৃষ্টকে অভিশাপ দিতে সুরু করে। বলে, কপাল পোড়া না হলে কারে গর্ভে এমন হৃদয়হীন নিষ্ঠুর ছেলে জন্ম নেয় । খেয়ালের বশে ছেলে চাকরী ছাড়ে, বাড়ীতে মাছটুকু দুধ টুকু আসা বন্ধ হয়, ছেড়া কাপড় পরে দিন কাটাতে হয় মা বোনকে ! কল্পনা মাঝখানে আরেকদিন এসেছিল। সেও সংসারের অবস্থা দেখে সুনীলকে অনেক অনুযোগ দিয়ে গেছে । সুনীল বলেছে, তুই নিজেকে সামলা তো, আমাদের জন্য তোর মাথা ঘামাতে হবে না। প্ৰণবের সঙ্গে ঝগড়া কমিয়েছিস তো ? তোমার ওই এক কথা ! ༡་་་་་་་་་ বেশীরভাগ দিন, রাত্রে সুনীলের বাড়ী ফেরা হয় না, সকালে বাড়ী আমাসে । (R