পাতা:পাশাপাশি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুনীল হাই তুলে নবীনকে বলে, তুমি দেখছি বড়ই আশ্চৰ্য্য হয়ে গেলে ? তুমিও তো বিভার বিপদটাকে সিরিয়াস ভাবতে পারনি! নবীন বলে, কি রকম ? বিপদটা কি জানি না, কিন্তু ছুটে এসেছি তো আপনাকে ডাকতে ?

ছুটে এসে এখানে গল্পে মেতে গেছ। দু’প গিয়ে মায়াদের বাড়ীতে আমায় খবর দেওয়া দরকার মনে করনি ।

নবীন অপ্ৰতিভ হয়, তর্কে কখনো হার মানে না । বলে, আল্পনা বললে, বসুন না, দাদা এক্ষুনি আসবে। আমিও ভাবলাম। আপনি ক্লাশ নিচ্ছেন

সেইজন্য তো বলছি তুমিও বিভার বিপদটা সিরিয়াস ভাবতে পারনি।
বিপদটা কি তা তো আমায় বলেনি । : আমি তো তাই বলছি। সত্যি সত্যি গুরুতর ব্যাপার কিছু হলে তোমার হাতে দু’লাইন চিঠি লিখে দিতে পারত না ? তোমায় না জানাতে চায়, খামে ভরে দিলেই হত !

কল্পনার আজ বড় খিদে পেয়ে গিয়েছিল আশ্চয্য অসহ গিদে। বিয়ের পর বাপের বাড়ী এলেই তার এরকম খিদে পায় ! সকলের আগে খেতে বসে। এদের কথার আওয়াজ শুনে তাড়াতাড়ি খাওয়া সেরে-শুকনো রুটিগুলি তাড়াতাড়ি চিবিয়ে খাওয়া যে কি কষ্ট, ভাত হলে, কেঁতে র্কোত করে গেরাসে গেরাসে পেটে চলে যায়-এটো হাতেই সে এসে দাড়িয়েছিল। এটা হাতটা উঁচু করে রেখে সে বলে, মুখ খুললেই তো ধমক খাব। :) সুনীল বলে, কেন মিছে কথা বলছিস ? ন্যাকামি না করলে আমি কাউকে ধমকাই না ।

তাহলে মনের কথাটা খুলেই বলি ! তুমি কিছু বোঝা না মেয়েদের ব্যাপার, কাণাকড়িও নয়। মেয়েদের কত রকমের বিপদ হতে পারে তোমার কোন ধারণাই নেই। এমন বিপদও হয় যা বাপমাকে জানানো যায় না, কাউকে লিখেও জানানো

8 R