জানিত না, শিলাখণ্ডই তাহাদিগের একমাত্র আয়ুধ ছিল। কিছুকাল পরে সে জাতীয় মনুষ্য এ প্রদেশ হইতে অন্তর্হিত হইল। তাহারা কোথায় গেল, কেন গেল, তাহা বলিতে পারি না, কারণ তখনও আমরা ভূগর্ভনিহিত ছিলাম। তোমরা অনুমান কর, সভ্যতর জাতি আসিয়া তীক্ষ্ণধার অস্ত্রের সাহায্যে পূর্ব্বোক্ত কৃষ্ণবর্ণ খর্ব্বাকার মনুষ্যজাতির ধ্বংসসাধন করিয়াছিল। তাহার কতকটা সত্য হইতে পারে, কারণ ইহার পরবর্ত্তী মনুষ্যেরা উজ্জ্বল ধাতুময় অস্ত্রের সাহায্যে মৃগয়া করিত। একদিন একজন ঐরূপ অস্ত্রের সাহায্যে আমাদিগকে ভেদ করিবার চেষ্টা করিয়াছিল। দূরে পাটলীপুত্রবাসী ভিক্ষুদত্ত যে স্তম্ভ দেখিতেছ উহার একপ্বার্শে অদ্যাবধি সেই অস্ত্রাঘাতের চিহ্ন বর্ত্তমান আছে। পরে জানিয়াছি, ঐ ধাতু তাম্র। শুনিয়াছি, যে জাতীর মনুষ্য তাম্রনির্ম্মিত্ত অস্ত্র ব্যবহার করিত, তাহাদিগের বংশধরেরা বিস্তীর্ণ দাক্ষিণাত্যে এখনও বাস করিতেছে। তোমাদের সংগ্রহশালায় তাম্রনির্ম্মিত আয়ুধের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত অল্প, কিন্তু তুমি বোধ হয় এই জাতীয় অস্ত্র অনেক দেখিয়াছ। তোমাদিগের পূর্ব্বপুরুষেরা যখন লৌহনির্ম্মিত অস্ত্রের সাহায্যে ভারতবর্ষ অধিকার করেন, তখন পূর্ব্ববাসীরা তাড়িত হইয়া বিন্ধ্য পর্ব্বতের দক্ষিণে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিল। ক্রমে বিজেতারাও লৌহ ব্যবহার করিতে আরম্ভ করায় অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তাম্রের ব্যবহার রহিত হইয়া যায়। একদিন রাত্রিকালে তাম্রনির্ম্মিত অস্ত্রধারী কতকগুলি লোক আমাদিগের বক্ষের উপর আসিয়া কয়েক স্থানে অগ্নি প্রজ্বালিত করিল। বহুকাল পরে সেই দিন ঐ আলোক দর্শন করিলাম। ইহার পূর্ব্ববর্ত্তী ঘটনা যাহা বলিয়াছি তাহা পাশ্ববর্ত্তী বালুকাকণার নিকট শুনিয়াছিলাম। অগ্নির সাহায্যে ক্রমে আমাদিগের বক্ষ ও পার্শ্বস্থিত তৃণক্ষেত্র ভস্মে পরিণত হইল। দারুণ উত্তাপে আমরা
পাতা:পাষাণের কথা.djvu/১৭
অবয়ব
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পাষাণের কথা
৫