পাষাণের কথা
করিয়াছে, তাহাদিগের সম্মুখে প্রাচীন রাজ্য সমূহ ধূলিসাৎ হইতেছে। বহুকাল পূর্ব্বে যবনেরা যখন আর একবার পঞ্চনদ অধিকার করিয়াছিল তখন তাহাদিগের যেরূপ আচার ব্যবহার ছিল এখন আর সেরূপ নাই। কেহ কেহ বলিত যে ইহারা যে যবন জাতি নহে, ইহারা সম্পূর্ণ বিভিন্ন। তাহাদিগের নাম শুনিয়া আমি ভাবিয়াছিলাম যে যাহাদিগের শিল্পকুশলতার ফলে জীবনের প্রারম্ভে আমাদিগের আকারের পরিবর্ত্তন সাধিত হইয়াছিল ইহারা তাহাদিগেরই বংশধর। আমার কৌতূহল অতি শীঘ্রই নিবৃত্ত হইয়াছিল। দেখিতে দেখিতে যবনসেনা আর্য্যাবর্ত্ত গ্রাস করিয়া ফেলিল। ত্রস্ত হইয়া আটবিক নগরবাসিগণ শুনিল যে যবনেরা নগর লুণ্ঠন করিতে আসিতেছে। সেদিন আর আমার মন্দিরে জনতা দেখা যায় নাই, আমার উপাসকগণ বিরসবদনে ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত হইয়া উপবেশন করিয়াছিল। দূরে যখন যবনসেনার অশ্বপদধ্বনি শ্রুত হইল তখন যে যেদিকে পথ পাইল দ্রুতবেগে পলায়ন করিল। দেখিতে দেখিতে শত শত যবন অশ্বারোহী মন্দির মধ্যে প্রবেশ করিল, উল্কার আলোকে অন্ধকার গর্ভগৃহ আলোকিত হইয়া উঠিল। যবনগণ মন্দিরে প্রবেশ করিয়াই লুণ্ঠনে প্রবৃত্ত হইল, ক্ষণেকের মধ্যে গর্ভগৃহ ত্যাগ করিয়া তাহারা বিশাল মন্দির প্রাঙ্গনের চতুষ্পার্শ্বে বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়িল। শত শত বর্ষের যত্নসঞ্চিত ধনরাশি বিনা বাধায় তাহাদিগের হস্তগত হইল। গর্ভগৃহের মধ্য দেশে একজন যবন অশ্বপৃষ্ঠে বসিয়া ছিল, তাহার সম্মুখে উল্কাহস্তে অপর দুইজন যবন দণ্ডায়মান ছিল; যবনসেনা লুণ্ঠনে প্রাপ্ত ধনরত্নরাজি আনয়ন করিয়া অশ্বারোহীর সম্মুখে নিক্ষেপ করিতেছিল। দেখিতে দেখিতে গর্ভগৃহের মধ্যস্থলে মনি মুক্তা ও সুবর্ণের স্তূপ নির্ম্মিত হইল। ক্রমে ক্রমে একে একে যবনগণ গর্ভগৃহে আসিয়া সম্মিলিত হইল, তাহাদিগের আকার
১৬০