পাতা:পুণ্ডরীককুলকীর্ত্তিপঞ্জিকা.djvu/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ পুণ্ডরীককুলকীৰ্ত্তিপঞ্জিকা ফকীর বাবুর পুষ্করিণী, ফকীর বাবুর বাগান, তাহার স্মৃতিচিহ্নস্বরূপ বর্তমান। ফকীর বাবু বয়োবৃদ্ধির সহিত নিতান্ত উচ্ছৃঙ্খল হইয়া উঠিলেন । র্তাহার নানা দোষ ঘটিল। সময়ে সময়ে পাগলের মত ব্যবহার করিতেন। কিছু দিন পবন বাবুর দেওয়ান হইয়াছিলেন। একবার কল্পতরু সাজিয়াছিলেন । এই সময়ে পাচখুপীনিবাসী ভুবনেশ্বর ঘোষ মল্লিক চতুরতা ও বুদ্ধিমত্তার জন্য খ্যাত ছিলেন । সীতারাম বাৰু মৃত্যুকালে বলিয়া গিয়াছিলেন, আমার একখানা দাত থাকিল, সে এই ভুবন মল্লিক । ভুবন মল্লিক রাজা লক্ষ্মীনারায়ণের দেওয়ানী করিতেন । র্তাহার বুদ্ধির বলে রাজা লক্ষ্মীনারায়ণ পবন বাবুর দৌরাত্ম্য হইতে আত্মরক্ষা করিতেন । ভুবনেশ্বর মল্লিক ফকার বাবুর সম্পত্তি রক্ষণের ভার লইয়া তাহাকে জালবদ্ধ করিয়া ফেলেন। ১২১৭ সালে নিরুপায় হরচন্দ্র মাতুল গদাধরের আশ্রয় প্রার্থী হয়েন । ১২১৯ সালে ভুবনেশ্বর মল্লিকের হস্ত হইতে উদ্ধারের জন্য হরচন্দ্রকে নিতান্ত কাতর দেখিতে পাওয়া যায় । ঐ বৎসর বৈশাখ মাসে তাহার সম্পত্তি মস্তফাপুর মহাদেবনগর ও সদাশিবপুর ৯৩৩৯৬৩/৮ জমায় ১২২৫ সাল পৰ্য্যস্ত মেয়াদে কাশীনাথ রাজপেয়ীকে ইজারা বিলি হয় । সেই বৈশাখ মাসেই ফকার বাবু গদাধর ত্রিবেদীকে আপনার মোক্তার ও কৰ্ম্মাধ্যক্ষ নিযুক্ত করেন । ১২১৯ সালের মাঘমাসে গদাধর ত্ৰিবেদীর মৃত্যু হয় । ফকীর বাবুর রক্ষার আর কোন উপায় থাকিল না । মাতুলের শাসন হইতে অব্যাহতি পাইয়া তিনি সম্পত্তি উড়াইতে লাগিলেন। ১২২৯ সালের পূর্বেই মস্তফাপুরের কিয়দংশ বিক্রয় করিলেন । ১২২৭ সালের ১২শে ভাদ্র তারিখে ফকার বাবু অনুচর সহ নৌকাযোগে জলবিহারে বহির্গত হইলেন । তাহার বন্ধুগণ র্তাহাকে নৌকা হইতে ঠেলিয়া ফেলিয়া দিল, এবং ফিরিয়৷ আসিয়া তাহার অপমৃত্যুকে দৈবঘটন বলিয়। রাষ্ট্র করিল। সেই রাত্রিতে র্তাহার বাড়ীঘর লুষ্ঠিত হইল । র্তাহার অসহায় পত্নী ব্রহ্মময়ী পিত্রালয়ে আশ্রয় লইলেন। সীতারাম ত্রিবেদীর আজ্জিত স্থাবর অবস্থার সমস্ত সম্পত্তি পরহস্তগত হইল । তাহার বাস্তুভিটার চিহ্ন পৰ্য্যন্ত অল্পদিন হইল লোপ পাইয়াছে । ব্ৰহ্মময়ী দেবী আপন ভগিনী ভগবতী দেবীর অন্ততম পুত্র রাধিকাসুন্দরকে পুত্রার্থে গ্রহণ করিয়া অনেক দিন পর্য্যস্ত জীবিত ছিলেন। রাধিকাসুন্দরের বংশীয়েরা সীতারামের নাম রক্ষা করিতেছেন ।