পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* গ্রামের লোক কতখানি বিশ্বাস রাখে। তাও তিনি মনে রাখিয়াছিলেন। শশী গ্ৰামে নাই শুনিয়া ভাবিয়াছিলেন, এখনপর্বদি। তিনি অস্বীকার করেন যে আগামী রথের দিন মরিবার কৃথা শশীকে বলেন নাই, শশী গ্রামে ফিরিবামাত্ৰ সকলে তাহাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করিবে । হয়তো ধৈৰ্য ধরিতে না পারিয়া কেহ বাজিতপুরে ছুটিয়া গিয়াও শশীর সঙ্গে দেখা করিয়া আসিবে। ব্যাপারটির গুরুত্ব শশী কিছু বুঝিতে পাৰ্বিবে না, একবার সে যা বলিয়াছে আবার সেই কথাই বলিবে । লোকে তখন মনে করিবে, হয় শশী মিথ্যাবাদী-নয় যাদব নিজে । আরও কত কি হয়তো যাদব ভাবিয়াছিলেন । হয়তো জনকুবের পিছনে কিরূপ এবং কতখানি শক্তি আছে বুঝিতে না পারিয়া যাদবের ভয় হইয়াছিল * এই বিরোধিতা করিলে জীবন অপেক্ষা যাহা তার প্রিয় তাহা বিনষ্ট হইয়া বে। হয়তো সমবেত মানুষগুলির উচ্ছাস নেশার মতো আচ্ছন্ন করিয়া দিয়াছিল যাদবকে । ভাবিবার তাহার সময় থাকে নাই । শশী কুসুমকে বলিল, মিথ্যে কথাগুলো বলে বেড়ালে কেন বৌ ? কুসুম বলিল, বলতে কেমন ইচ্ছে হচ্ছিল ছোটবাবু, তাই। e মাথাটা তোমার খারাপ নাকি সময় সময় তাই ভাবি ત્રિી, অবাক अie: ड्यूबि।

  • কয়েকটা দিন চলিয়া গেল। কলিযুগের ইচ্ছা-মৃত্যু মহাপুরুষ যাদবকে দেখিবার জন্য নিকট ও দূরবর্তী গ্রামের লোক কায়েতপাড়ার পথটিকে জনাকুল । করিয়া রাখিল । মুড়ি-চিড়া বেচিয়া শ্ৰীনাথ আর লোচন ময়রা বোধ হয় বড়লোকই হইয়া গেল। শ্ৰীনাথ দু হাতে মুড়ি-চিড়া বেচে, দু হাতে পয়সা লইয়া কাঠের বাক্সে রাখে, সৰ্বক্ষণ হায় হায় করে । কয়েকদিনে পাগলদিদি শীর্ণ হইয়া গেলেন। শশীর মনেও গুরু-ভার চাপিয়া আছে। রথের দিন কি হুইবে সে বুঝিতে পারে না। সত্যই কি মনের জোরে যাদব সেদিন দেহত্যাগ করিতে পরিবেন ? এ যে বিশ্বাস করা যায় না । না মরিলেই বা যাদবের ব্ধি অৰস্থা হুইবে ?
  • যেখানে যায় শশী, এই কথাই আলোচিত হইতে শুনিতে পায় । যাদব মজিবেন বলিয়া অনেকেরই আপসোস নাই, সাগ্রহে রথের দিনটির প্রতীক্ষা করিতেছে। শশীকে চুপ করিয়া থাকিতে হয়। মিথ্যার ভিত্তিতে যে এত বড় ব্যাপারটা গড়িয়াছে, মুখ ফুটিয়া প্ৰকাশ করিবার উপায় নাই। এই জনমতের উৎস সে, কিন্তু এ গুজবকে পরিবর্তিত করিবার ক্ষমতা তাহাক্স নাই। একটি অগ্নিস্ফুলিঙ্গ হইতে শুকনো চালে আগুন ধরিয়াছে, কারো ক্ষমতা নাই

SVR