পাতা:পুতুলনাচের ইতিকথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপার্থিব দৃশ্যের স্মৃতি । দুঃখযন্ত্রণার সময় এ কথা মনে পড়িবে । জীবন রুক্ষ নীরস হইয়া উঠিলে এ আশা করিবার সাহস থাকিবে যে, খুজিলে এমন কিছুও পাওয়া যায় জগতে, বঁচিয়া থাকার চেয়ে যা বড় । শোক, দুঃখ, জীবনের অসন্থ ক্লাস্তি এ সব তো তুচ্ছ, মরণকে পৰ্যন্ত মানুষ মনের জোৰ্ব্বে জয় করিতে পারে । কত সংস্কীর্ণ দুর্বল চিত্তে যে যাদব বৃহতের জন্য, মৃদু হোক, প্ৰবল হোক, ব্যাকুলতা জাগাইয়া রাখিয়া গিয়াছেন, শশী তাই ভাবে । যখন ভাবে, তখন আপিমের ক্রিয়ায় যাদবের চামড়া ঢাকিয়া চটচটে ঘাম, বিন্দুর মতো ছোট হইয়া আসা চোখের তারকা আর মুখে ফেনা উঠিবার কথা সে ভুলিয়া যায়। বর্ষা আসিয়াছে। খালে জল বাড়িল, ডোবা-পুকুর ভরিয়া উঠিল । চারিদিকে কাদা, ভাঙা পথে কোথাও যাওযা মুশকিল। পুলকি-বোহারাদের পা কাদায় ডুবিয়া যায়, ধীরে ধীরে চলিতে হয়। এমনি বৃষ্টিবাদলার মধ্যে একদিন কুসুমের বাবা মেয়েকে লাইতে আসিল । সেইদিন তালপুকুরের ধারে কুসুম কেমন করিয়া পড়িয়া গেল সে-ই জানে। বলিল, কোমরে চোট, লাগিয়াছে আর হাতটা গিয়াছে ভাঙিয়া । কি করে যাব তোমার সঙ্গে ? আমি তো যেতে পারব না। বাবা ! পুজোর সময় এসে আমায় নিয়ে যে ও । কুসুমের বাবা অনস্ত আপসোস করিয়া বলিল, কতকাল যাওয়া হয় নি, তোর মা কঁাদাকাটা করেন। কুসি। দুটো দিন। বরং দেখে যাই, ব্যথাটা যদি কমে । কুসুম বলিল, দু-চার দিনে এ ব্যথা কি কমবে বাবা ? কোমরের ব্যথায় নড়তে পারি না । হাড়-টাড় কিছু ভেঙেছে নাকি কে জানে! t হাতটা সত্যসত্যই মাচকাইয়া গিয়াছিল। শশী আসিয়া পরীক্ষা করিবার সময় এক ফাকে জিজ্ঞাসা করিল, ইচ্ছে করে পড় নি তো বৌ ? কী যে বলেন ছোটবাবু! ইচ্ছে করে পড়ে কেউ কোমর ভাঙে ? হাতে। তবে তোমারী কিছু হয় নি, শুধু কোমর ভেঙেছে, না ? KİNS'es CVSCstz-3 < f(a ! শশী হাতটা নাড়িয়া চড়িয়া বলিল, কই, বেশী ফোলে নি তো ? কুসুম রাগিয়া বলিল, আবার কি ফুলবে ছোটবাবু, ফুলে কি ঢাকি হবে ? পরদিন দুপুরবেলা • আকাশ-ঢাকা মেঘে চারিদিক অন্ধকার হইয়া আসিয়াছিল। শশী বসিয়া ছিল নিজের ঘরে । গ্ৰামান্তরে রোগী দেখিতে যাইবার কথা ছিল, মেঘ দেখিয়া বাহির হয় নাই। নানা কথা ভাবিতে ভাবিতে SVD)