পাতা:পুনশ্চ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
পুনশ্চ

সেবার বসন্ত এল।
কে জানবে, হাওয়ার থেকে
ওর মজ্জায় কেমন করে কী বেদনা আসে!
অদূরে শালবন আকাশে মাথা তুলে
মঞ্জরী-ভরা সঙ্কেত জানালে
দক্ষিণ সাগর-তীরের নবীন আগন্তুককে।
সেই উচ্ছ্বসিত সবুজ কোলাহলের মধ্যে
কোন্ চরম দিনের অদৃশ্য দূত দিল ওর দ্বারে নাড়া,
কানে কানে গেল খবর দিয়ে
একদিন নামে শেষ আলো,
নেচে যায় কচি পাতার শেষ ছেলেখেলার আসরে।


দেরি করলে না।
তার হাসিমুখের বেদনা
ফুটে উঠল ভারে ভারে
ফিকে বেগুনি ফুলে।
পাতা গেল না দেখা,
যতই ঝরে, ততই ফোটে,
হাতে রাখল না কিছুই।
তার সব দান এক বসন্তে দিল উজাড় করে।
তার পরে বিদায় নিল
এই ধূসর ধূলির উদাসীনতার কাছে॥

৫ ভাদ্র, ১৩৩৯