পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৪
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

দাণ্ডাইল আন্ধা বান্ধৈ বাঁশী হাতে লৈয়া।
“এই নেউরের শব্দ মোরে কিবান দিল কইয়া॥
বাঁশী.....
এই নেউরের[১] স্বপন-ধ্বনি কার চরণে বাজে।
অনেক দিনের ভোলা কথা আজ পইরাছে মনে॥
পুষ্পবনে সুন্দর কন্যা শুনত বাঁশীর গানে।
স্বপ্নের মত এই সে নেউর বাজত তার চরণে॥
সেই কন্যা যদি লো তুমি মোরে দেহ কথা।
কেন বা জাগিয়া উঠলো ভোলা দিনের বেথা॥”

“শুন শুন বন্ধু আরে কহি যে তোমারে।
পাগল কইরাছে তোমার ঐনা বাঁশীর সুরে॥
ঘর ছাড়লাম বাড়ী ছাড়লাম জাতি কুলমান।
আর বার বাজাও বন্ধু শুনি তোমার গান॥”

চমকিয়া মুখের বাঁশী হাতেত লইল।
“অল্প বুদ্ধি কন্যা হায় কি কাম করিল॥
কন্যা ঘরে ফিইরা যাও।
রাজত্তি সুখের ঘর কেন বা ভাঙ্গাও।
কন্যা ঘরে......
সোণার থালে খাইবা অন্ন পিন্‌বা[২] পাটের শাড়ী।
আমি হইলাম বনের পঙ্খী তুমি রাজার নারী॥
কন্যা ঘরে......!
রত্নাদি কাঞ্চন অঙ্গে যতনে ধরিবা।
বনের বাকল পিন্ধ্যা[৩] কেমনে থাকিবা॥
কন্যা......॥


  1. নেউর=নুপূর।
  2. পিন্‌বা=পরিধান করিবে
  3. পিন্ধ্যা=পরিয়া।