পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৬
পূর্ব্ববঙ্গ গীতিকা

দেখি নাই রাক্ষসে গো শুনিতে কাঁপে হিয়া।
দশমুণ্ড রাবণ রাজা গো দেখাও আঁকিয়া॥”১৪

মুর্চ্ছিতা হইল সীতা গো রাবণ-নাম শুনি।
কেহ বা বাতাস দেয় গো কেহ মুখে পানি॥১৬
সখীগণ কুকুয়ারে গো করিল বারণ।
“অনুচিত কথা তুমি গো বল কি কারণ॥১৮
রাজার আদেশ নাই গো বলিতে কুকথা।
তবে কেন ঠাকুরাণীর গো মনে দিলে ব্যথা॥”২০
প্রবোধ না মানে গো কুকুয়া ননদিনী।
বার বার সীতারে গো বলয়ে সেই বাণী॥২২

সীতা বলে “আমি তারে গো না দেখি কখন।
কিরূপে আঁকিব আমি গো পাপিষ্ঠ রাবণ॥”২৪
যত করি বুঝান সীতা গো কুকুয়া না ছাড়ে।
হাসিমুখে সীতারে গো সুধায় বারে বারে॥২৬

বিষলতার বিষফল গো বিষগাছের গোটা।
অন্তরে বিষের হাসি গো বাধাইল লেঠা॥২৮
সীতা বলে “দেখিয়াছি গো ছায়ার আকারে।
হরিয়া যখন দুষ্ট গো লয়ে যায় মোরে॥৩০
সাগর-জলেতে পরে গো রাক্ষসের ছায়া।
দশ মুণ্ড কুড়ি হাত গো রাক্ষসের কায়া॥”৩২

বসি ছিল কুকুয়া গো শুইল পালঙ্কেতে।
আবার সীতারে কয় গো রাবণ আঁকিতে॥৩৪
এড়াতে না পারে সীতা গো পাখার উপর।
আঁকিলেন দশমুণ্ড গো রাজা লঙ্কেশ্বর॥৩৬

শ্রমেতে কাতর সীতা গো নিদ্রায় ঢালল।
কুকুয়া তালের পাখা গো বুকে তুলি দিল॥৩৮