পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীরালনী
৪৪১

সোণার বাটায় গাইষ্ঠ খিলা যতনে বান্ধিয়া।
ধাই দাসী চলে সঙ্গে উলাস করিয়া॥
কেউ লইল গামছা আর কেউবা পাটের শাড়ী।
কেউ লইল গন্ধ তেল কেউ বা সন্নের ঝারি॥

আস্তে ব্যস্তে চলে তারা দড়বড়ি পথ।
ততক্ষণে গেল জীরা নয়া গাঙ্গের ঘাট॥
মনের বাহার পানসী বৈঠা পবন কাটে।
সেই নাও পাইয়। কন্যা পারা দিল ঘাটে॥
ভাসিল মনের[১] নাও জলের উপরে।
আউলা দীঘল কেশ ডেউয়ে নাইসে ধরে॥
আছাড় খাইয়া পানি নাও ভাসাইল।
উতালা তুরুঙ্গ[২] ঢেউ পাগল হইল॥
সন্নের পরতিমা খানি ঢেউয়ে ভাইস্যা যায়।
এরে দেখ্যা ধাই দাসী করে হায় হায়॥
ধাই দাসী ডাক্যা কয় কন্যা পাড়েত উত্তর।
কি দিব উত্তর মায়ে যদি না যাও ঘর॥
মাঝ নদীতে থাক্যা কন্যা ডেউয়ে মারে বাড়ি।
জলের উপরে কন্যা ভাসে একেশ্বরী॥

শুন শুন ধাই দাসী তোমরা যাও ঘরে।
বাপের আগে জানাও খবর মায়ের গোচরে॥
ভাইয়ের আগে জানাও খবর আর না কিছু চাই।
জলেতে ডুবিয়া মরি অন্য উপায় নাই।
সংসারে নাই মোর বাপ মাও ভাই॥


  1. মনের=মনপবন নামক কাঠের।
  2. তুরুঙ্গ=তরঙ্গ।
৫৬