পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কাঞ্চনমালা
৮৯

কেমন সর্ব্বনাশী জানি এই শিশুর মাও।
পথেতে এড়িয়া গেল তাই তুমি পাও॥১৪
কেমন দুষ্‌মণ জানি এই শিশুর বাপ।
আর জন্মে করে শিশু না জানি কি পাপ॥১৬
দুধের ছাওয়াল এযে তার অন্ধ দুই আঁখি।
চান্দ সুরুজের জন্মে নাহি দেখি[১]১৮
জন্ম দুঃখীর দুঃখু বাপ কভু নাহি যায়।
কোন কালে অন্ধের না রজনী পোহায়[২]২০

(৭)

মুখে নাহি সরে রাও না কহিলে নয়।
কান্দিয়া কান্দিয়া সাধু কহে সমুদয়॥
শুনগো আদরের কন্যা কহি যে তোমারে।
সন্ন্যাসী যতেক কইল আমার গোচরে॥
অপুত্ত্রা আটকুড়া আমি ডুব্যা মরতে চাই।
দৈবযোগে সন্ন্যাসীরে পথে লাগাল পাই॥
এক ফল দিল যোগী তোমার কারণে।
সেই ফলের গুণে পাই তোমা এন[৩] ধনে॥


  1. এই শিশু জন্মান্ধ, সুতরাং চন্দ্র সূর্য্যের মুখ দেখিতে পায় নাই।
  2. অন্ধের রাত্রি কখনও প্রভাত হয় না।
    কাঞ্চনমালার উক্তি হইতে বোঝা যাইতেছে প্রথম দর্শন মাত্রই অন্ধ বালকের প্রতি তাহার হৃদয়ে অপার করুণা জাগিয়া উঠিয়াছে—এই করুণা অনুরাগের অগ্রদূত। এত ছোট শিশুর প্রতি যে স্নেহ হইতে পারে—তাহাই কবি স্বাভাবিক ভাবে বর্ণন করিয়াছেন। কিন্তু অঙ্কুরে
    যেরূপ বৃক্ষ লুক্কায়িত থাকে—এই স্নেহ তদ্রূপ পরবর্ত্তী ভালবাসার আভাস দিতেছে।
  3. এন=হেন।