বিদায় দেও জন্মের মত কাঠুরিয়া বাপ।
আমার লাগিয়া তোমরা পাইলা বড় তাপ॥৮
তোমাদেরে ছাইড়া যাইতে মনে নাহি লয়।
কইছি বা না কইছি কত থাকুক সমুদয়[১]॥১০
জন্মিয়া না দেখিয়াছি মায়ের চান্দ মুখ।
তোমরা দুইয়ে দেখ্যা মাগো পাসুরছিলাম[২] দুখ॥১২
বনের কথা মনের কথা সব রইল পড়ি।
আজি হইতে যাও তোমরা অভাগীরে ছাড়ি॥১৪
কার কাছে কইবাম দুঃখ কার বা কাছে চাই।
আইজ হইতে জানিও মাগো কাঞ্চনমালা নাই॥১৬
কান্দে কান্দে কাঠুরাণী মাথা থাপাইয়া[৩]।
কেমনে যাইব মাগো তোমারে ছাড়িয়া॥১৮
অপুত্ত্ররার[৪] পুত্ত্র তুমি নির্ধনিয়ার ধন।
কেমনে ছাড়িয়া তোমায় যাইবাম আমরা বন॥২০
শীতল নদীর পানি দাড়াকের ছায়া।[৫]।
ছাইড়া যদি যাইবা কেন বাড়াইলে মায়া॥২২
গলাগলি মায়ে ঝিয়ে জুড়িল কান্দন।
দৈবযোগে হইয়াছিল মায়ার বান্দন॥২৪
- ↑ যে সকল কথা তোমাদিগকে বলিয়াছি ও যাহা বলি নাই, সে সমস্ত কথা আজ আর তুলিব না। পরের এক ছত্রেও এই ভাবটি আছে—
“বনের কথা মনের কথা সব রইল পড়ি”।
ইহার পূর্ব্বে একস্থানে আছে যে কাঞ্চনমালা একাকী বনে বনে ঘুরিতেছে অথচ এখানে দেখা যায় তার কাঠুরিয়া মা বাপ তার সঙ্গে সঙ্গে ছিল। এই সকল অসঙ্গতি গায়েনদের প্রক্ষিপ্ত ও বিকৃত রচনার দরুণ ঘটিয়াছে।
- ↑ পাসুরছিলাম=পাশরিয়া ছিলাম, ভুলিয়াছিলাম।
- ↑ থাপাইয়া=থাপড়াইয়া।
- ↑ অপুত্ত্ররার=অপুত্ত্রকের।
- ↑ নদীর জল শীতল ও ‘দাড়াক’ বৃক্ষের ছায়া শীতল, তোমার স্নেহও সেইরূপ।