পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (দ্বিতীয় খণ্ড দ্বিতীয় সংখ্যা) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ফিরোজ খাঁ দেওয়ান
৪৭৩

আমার স্বামী বন্দী করে কেমন বুকের পাটা
জঙ্গেতে বুঝিবাম তারে কেমন বাপের বেটা॥১১৬
দোওয়া[১] কর মা জননী দোওয়া কর মোরে
রণে জিত্যা পুত্র তোমার আন্যা দিবাম ঘরে।

চক্ষের পানি মুছ্যা বিবি কয় সখিনার আগে
তোমার কথা শুন্যা মা গো দিলে দরদ লাগে॥১২০
মরদ হইয়া পুত্র আমার রণে বন্দী হইল
এমন রণে যাইতে তোমায় কেবা সল্লা দিল।
আন্ধ্যাইর ঘরের বাতি তুমি অন্ধের যে লড়ী[২]
লহমার ল্যাগ্যা তোমায় ছাড়িতে না পারি॥১২৪
পাউরিবাম[৩] পুত্র শোক তোমার মুখ দেখিয়া
জঙ্গেতে যাইতে তোমায় না দিবাম ছাড়িয়া।

এই কথা শুনিয়া কন্যা কহিতে লাগিল
আর বার রণে যাইতে বিদায় চাহিল॥১২৮
মানা না করিয়ো মা গো বিদায় দেও মোরে
রণে জিত্যা স্বামী লইয়া আইবাম আমি ঘরে।
নছিব যদি বোরা হয় মা রণে যদি মরি
স্বামীর লাগ্যা রণে মরতে দুঃখু নাই সে করি॥১৩২
সোয়ামীর লাগ্যা আমি তেজিবাম জান্
বিদায় কালেতে মা গো জানাই ছেলাম।
শাউরী বউএ কান্দে দুয়ে গলা ধরাধরি
আন্ধাইরে ঘিরিয়া লইল সোনার জঙ্গলবাড়ী॥১৩৬

সাজ্যা পাইরা[৪] দুলাল[৫] ঘোড়া দুয়ারে হইল খাড়া
সোয়ার হইলে বিবি, শূন্যে দিল উড়া॥


  1. দোওয়া=আশীর্ব্বাদ।
  2. লড়ী=যষ্টি।
  3. পাউরিবাম=পাশরিব; ভুলিব।
  4. সাজ্যা পাইয়া=সাজিয়া পরিয়া।
  5. দুলাল=ঘোড়ার নাম।