ভাব্ছি যদি তোমরা দু’জন বছর তিরিশ পূর্ব্বেতে
গরজ ক’রে আস্তে কাছে, কিছু তবু সুর পেতে।
সেদিন যখন আজ্কে দিনের বাপ-খুড়ো সব নাবালক,
বর্ত্তমানের সুবুদ্ধিরা প্রায় ছিলো সব হাবা লোক,
তখন যদি ব’ল্তে আমায় লিখ্তে পয়ার মিল ক’রে,
লাইনগুলো পোকার মতো বেরতো পিল্-পিল্ ক’রে।
পঞ্জিকাটা মানো না কি, দিন দেখাটায় লক্ষ্য নেই?
লগ্নটি সব বইয়ে দিয়ে আজ এসেছো অক্ষণেই।
যা হোক তবু যা পারি তাই জুড়্বো কথা ছন্দেতে,
কবিত্ব-ভূত আবার এসে চাপুক আমার স্কন্ধেতে।
শিলংগিরির বর্ণনা চাও? আচ্ছা না হয় তাই হবে,
উচ্চদরের কাব্যকলা না যদি হয় নাই হবে;—
মিল বাঁচাবো, মেনে যাবো মাত্রা দেবার বিধান তো;
তা’র বেশী আর ক’র্লে আশা ঠক্বে এবার নিতান্ত।
* * *
গর্ম্মি যখন ছুট্লো না আর পাখার হাওয়ায় সর্বতে,
ঠাণ্ডা হ’তে দৌড়ে এলুম শিলঙ্ নামক পর্ব্বতে।
মেঘ-বিছানো শৈলমালা গহন-ছায়া অরণ্যে
ক্লান্ত জনে ডাক দিয়ে কয়, “কোলে আমার শরণ নে।”
ঝর্ণা ঝরে কল্কলিয়ে আঁকাবাঁকা ভঙ্গীতে,
বুকের মাঝে কয় কথা যে সোহাগ-ঝরা সঙ্গীতে।
পাতা:পূরবী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৩৩
অবয়ব
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
শিলংয়ের চিঠি
২২
