পাতা:পূর্ববঙ্গ ও হিন্দু সমাজ.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পূর্ববঙ্গ ও হিন্দু সমাজ

নিশ্চেষ্টতাকে যেন সমদর্শিতা বলিয়া ভুল বুঝা না হয়। প্রাচীন ভারতের মহামহিম স্মৃতিকার মনু আত্মরক্ষার জন্য আততায়ীকে বধ পর্যন্ত করিবার বিধান দিয়াছেন। আর শ্রীমৎ স্বামী বিবেকানন্দ মহানির্বাণতন্ত্রের “গৃহী ব্যক্তি শত্রুর সম্মুখে শূরভাব অবলম্বন করিবেন”—এই উক্তিটি উদ্ধত করিয়া উহার ব্যাখ্যাপ্রসঙ্গে বলিয়াছেন, “শত্রুগণকে বীর্য প্রকাশ করিয়া শাসন করিতে হইবে। ইহা গৃহস্থের কর্তব্য। গৃহস্থের পক্ষে ঘরের এক কোণে বসিয়া কাঁদিলে আর ‘অহিংসা পরমাে ধর্মঃ বলিয়া বাজে বকিলে চলিবে না। যদি তিনি শত্রুগণের নিকট শৌর্য প্রদর্শন না করেন, তাহা হইলে তাহার কর্তব্যের অবহেলা করা হয়।” (‘কর্মযােগ’, ২য় অধ্যায়)

 তাঁহাদের ইহাও জানা উচিত যে কেহ নিপীড়িত হইয়া ধর্মান্তর। গ্রহণ করিতে বাধ্য হইলে তাহার স্বধমে ফিরিয়া আসার পক্ষে কোন বাধা থাকিতে পারে না। ধর্ম মানুষের আন্তরিক বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত। উহা বাহিরের জবরদস্তি দ্বারা কেহ নাশ করিতে পারে না। স্বামী বিবেকানন্দের নগণ্য অনুগামী হিসাবে আমাদের দৃঢ় ধারণা যে হিন্দুসমাজ ধর্মের নামে ছুৎমার্গ, স্বধর্মে। প্রত্যাবর্তন নিরােধ ও আরও নানাবিধ বাধারূপ কূপমণ্ডুকত্বের। শেষ চিহ্নগুলি মুছিয়া ফেলিবার জন্য প্রস্তুত হইয়াছে। ঐগুলি এখন শুধু নিরর্থক নহে, বরং যে সমাজ একদিন এত বলশালী ছিল