পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

QoS) ভারতবর্ষ। ভারতের সহিত সম্বন্ধ-সুত্ৰ । ‘কুঙ’ উপঢৌকন প্ৰদান উপলক্ষে এবং রাজদূতগণের গতিবিধিসূত্ৰে, চীনে বাণিজ্যপ্ৰতিষ্ঠার কিঞ্চিৎ আভাষ পুৰ্ব্ববৰ্ত্তী অংশে প্রদত্ত হইয়াছে। সে সময়ে যেমন ভারতীয় দূতের চীনে গতিবিধি ছিল, তেমনি চীনদেশের রাজদূতও ভারতে আগমন করিতেন। খৃষ্ট-পূর্ব প্রথম শতাব্দী হইতেই যে ভারতে দূতগণের গতিবিধি ছিল, চীনদেশের রাজকীয় বিবরণীতে সে পরিচয় প্ৰাপ্ত হই। • দূতগণের গতিবিধি-সুত্রেই চীনে বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রবর্তন। কি সুত্রে কি ভাবে চীন-দেশের ও ভারতের মধ্যে এই সম্বন্ধ-সুত্র প্রতিষ্ঠা হয়, এস্থলে তাহার একটু আভাষ প্ৰদান করিতেছি। ১২৫-১১৫ পূর্ব-খৃষ্টাব্দে, ‘ইয়েচি ( শক) জাতি যখন অক্সাস নদীর উত্তরে ‘সকৃডিয়ানায় বসতি করিতেছিল, সেই সময় চীন-সেনাপতি 'চং-কিয়েন” প্রমুখ দূতগণ তঁহাদের নিকট আগমন করেন। তখন ঐ প্রদেশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হইত। সেই হইতে চীনের সহিত ভারতের সম্বন্ধ প্ৰতিষ্ঠাব সুত্রপাত হয়। এক শত বৎসরের অধিককাল শকদিগের সহিত চীনেব বন্ধুত্ব বন্ধন অক্ষুন্ন থাকে। তাব পর ৮ খৃষ্টাব্দে উভয় জাতিব রাজনৈতিক সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন হইয়া যায়। ২৩ খৃষ্টাব্দে, ‘হান”- বংশের অবসানে, পশ্চিম দিকে চীনের আধিপত্য বিলুপ্ত হয় । ভারত কর্তৃক চীন-বিজর । প্ৰায় পঞ্চাশ বৎসর পবে, ৭৩ খৃষ্টাব্দ হইতে ১০২ খৃষ্টাব্দের মধ্যে, চীনের সেনাপতি “পান-চাও’ দেশ-বিজয়ে বহির্গত হন । তঁাহাব বিজয়ী সৈন্য রোম-সাম্রাজ্যের সীমান্ত পৰ্য্যন্ত উপস্থিত হইয়াছিল। কাসগড়, কচ্ছ ও খোটান প্ৰভৃতি বিজিত হওয়ায়, চীনের বাণিজ্য প্রসার স্থলপথে বহুদুর বিস্তৃত হইয়া পড়ে। চীন-সৈন্যের বিজয়লাভে কুশন বা শকগণ আতঙ্কিত হন। ঐতিহাসিকগণের মতে তখন কনিক্ষ রাজ-সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন । তিনি চীন রাজের বশ্যতা-স্বীকারে অসন্মত হন। অধিকন্তু ৯০ খৃষ্টাব্দে কনিক্ষ চীনের রাজকন্যার পাণি-গ্ৰহণের প্রস্তাব করেন । সেনাপতি পানচাও, কনিক্ষের এই দাস্তিকতাপুর্ণ প্ৰস্তাব চীন-সম্রাটের অপমানজনক মনে করেন এবং কনিক্ষ-প্রেরিত দূতকে বন্দী করিয়া চীনে পাঠাইয়া দেন । কনিক্ষ এ অপমান সহা করিতে পারিলেন না । বিপুল বাহিনী সজ্জিত হইল। সেনাপতি সি-র অধীনে প্ৰায় সত্তর হাজার পদাতিক চীন আক্রমণে অগ্রসর হইল। তখন চীনে যাইতে হইলে “তুংলিং' পৰ্বতমালা পার হইতে হইত। উহার অপর নাম“তাগিদুম্বাস পামির।” ঐ পৰ্ব্বতে চৌদ্দ হাজার ফিট উচ্চে একটী পাৰ্ব্বত্য-পথ ছিল । সে পথের নাম-টাস্কুরঘান পাশ।” টােসকুরঘান অতিক্রম-কালে পথশ্রান্তে এবং অত্যধিক শৈত্যে, যন্ত্রণায় অধীর হইয়া, কনিক্ষের অধিকাংশ সৈন্য মৃত্যুমুখে পতিত হয়। অবশিষ্ট সৈন্য পৰ্বত অতিক্রম করিয়া সমতল-ক্ষেত্রে পৌছিবামাত্ৰ চীনাদিগের আক্রমণে বিধ্বস্ত বিপৰ্য্যস্ত হইয়া যায়। কনিক্ষের চীনজয়েচ্ছা এবং চীন-রাজকন্যার পাণিগ্রহণের আকাঙ্ক্ষা চিরতরে