পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের গুপ্ত-নৃপতিগণ । S8s লিচ্ছবিরাজ হয় তো চন্দ্ৰগুপ্তকে জাতিতে এবং পদমৰ্যাদায় শ্রেষ্ঠ বলিয়াও বুঝিয়াছিলেন। তাই চন্দ্ৰগুপ্তকে কন্যা-সম্প্রদানে তিনি কুণ্ঠ বোধ করেন নাই। অন্ততঃ, জাতিতে এবং বংশমর্যাদায় সমকক্ষ বলিয়া বুঝিয়াও কন্যা-সম্প্রদানে অগ্রসর হইয়াছিলেন। এইরূপে, আমাদের সিদ্ধান্তে মগধের গুপ্ত-নৃপতিগণ ক্ষত্ৰিয় বলিয়া প্ৰতিপন্ন হন। তবে র্তাহারা ক্ষত্ৰিয়-বংশের কোন শাখার অন্তর্ভুক্ত, তাহা নির্ণয় করা সুকঠিন। ভারতের প্রাচীন সাহিত্যে অথবা ধৰ্ম্মশাস্ত্রে সে পরিচয়ের অসদ্ভাব দেখি । গুপ্তগণের অশ্বমেধ-যজ্ঞ অনুষ্ঠানের বিষয় আলোচনায়ও তঁহাদের ক্ষত্ৰিয়ত্ব প্ৰতিপন্ন হয়। ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ববিৎ সেই সাক্ষ্য প্ৰদান করে। ক্ষত্রিয় ভিন্ন অন্য কোনও জাতি কখনও অশ্বমেধ-যজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন নাই। বেদ-পুরাণাদি হইতে আরম্ভ করিয়া আধুনিক কাল পর্যান্তের ইতিহাস আলোচনায় সেই সিদ্ধান্তেই উপনীত হই। পূৰ্ব্বকালে যে সকল জাতি বলবান, দানশীল, যুদ্ধনিপুণ এবং প্ৰজাপালনে সমর্থ ছিলেন, র্তাহারাই ক্ষত্ৰিয় নামে অভিহিত হইতেন। আমরা মনে করি।-গুণকৰ্ম্মবিভাগ অনুসারে যে জাতিবিভাগের বিষয় গ্রন্থাদিতে দৃষ্ট হয়, প্ৰাচীনকালে জাতি-নির্ণয়ের তাঁহাই মেরুদণ্ডস্থানীয় ছিল। গুপ্তগণ যেমন প্ৰজারঞ্জক, তেমনি যুদ্ধনিপুণ, তেমনি বলিষ্ঠ ও দানপরায়ণ ছিলেন। তঁহাদের উৎকীর্ণ লিপি ও মুদ্রাদিতে তাহার নিদর্শন বৰ্ত্তমান। তাহা হইতেও তঁহাদের ক্ষত্ৰিয়ত্ব সপ্ৰমাণ হইয়া থাকে । 岑 米 锋界 গুপ্তগণ কোন ধৰ্ম্মাবলম্বী ছিলেন ? গুপ্ত-রাজগণ ক্ষত্ৰিয় হইলেও বিষ্ণুর উপাসক ছিলেন। কিন্তু বিষ্ণুর উপাসক বলিয়া তঁহাদিগকে “বৈষ্ণব’ বলিতে পারি না । বিষ্ণুর উপাসনা স্মরণাতীত কালের প্রবর্তন। কেবল বৈষ্ণব বলিয়া নহে, হিন্দুধৰ্ম্মালম্বী সকল জাতিই স্মরণাতীত কাল হইতে বিষ্ণুর উপাসনা করিয়া আসিতেছেন । সুতরাং শাক্ত, শৈব, গাণপত্য-সকল সম্প্রদায়কেই এক হিসাবে বিষ্ণুর উপাসক বলা যাইতে পারে । কোন-না-কোনও আকারে বিষ্ণুর উপাসনা সকল সম্প্রদায়ের মধ্যেই প্ৰচলিত আছে। সুতরাং বিষ্ণুর উপাসক মাত্রেই যে বৈষ্ণব, তাহ বলা যায় না। বৈষ্ণব-ধৰ্ম্ম আধুনিক-শ্ৰীচৈতন্যের আবির্ভাব কাল হইতেই তাহার প্রতিষ্ঠা । আবার বিষ্ণুর উপাসক গুপ্তরাজগণের শিব দুৰ্গা প্ৰভৃতির মন্দির প্রতিষ্ঠার নিদর্শনও প্রাপ্ত হই। সুতরাং অধুনা বৈষ্ণব-ধৰ্ম্ম বলিতে যে ভাব উপলব্ধি হয়, অথবা “বৈষ্ণব-ধৰ্ম্ম’ বলিতে যাহা বুঝায়, গুপ্তরাজগণ বিষ্ণুর উপাসক বৈষ্ণব হইলেও তঁাহারা সে ভাবের বৈষ্ণবধৰ্ম্মের উপাসক ছিলেন না, অথবা সে ভাবের বৈষ্ণবও ছিলেন না। মুদ্রাদিতে দ্বিতীয় চন্দ্ৰ-গুপ্ত, কুমার-গুপ্ত এবং স্কন্দ-গুপ্ত ‘পরম ভাগবত” নামে অভিহিত হইয়াছেন। তাহাতে র্তাহারা ভগবান বাসুদেবের উপাসক ছিলেন বুঝা যায়। তবে গুপ্তরাজগণের সকলেই বিষ্ণুর উপাসক ছিলেন, তাহাতে সন্দেহ নাই। ৪২ গুপ্তাব্দে ( ৪০০ খৃষ্টাব্দে ) উদয়গিরির কতকগুলি লিপি উৎকীর্ণ হয়। সেই লিপির