পাতা:পৃথিবীর ইতিহাস - অষ্টম খণ্ড (দুর্গাদাস লাহিড়ী).pdf/৩৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N088 ভারতবর্ষ । তুলাদণ্ডে বিচার করিতেন। অন্যায় অবৈধ তাহার দ্বারা কদাচি সম্ভব হয় নাই। তঁহার দানের অবধি ছিল না । লক্ষ্মণসেনের দান-কাহিনী প্ৰবাদ-মধ্যে গণ্য হয়। হিউয়েনৎ-সাঙের গ্রন্থে রাজা হর্ষের দানের যে দৃষ্টান্ত দেখিয়াছি, কথিত হয়, লক্ষ্মণসেনের দান তদনুরূপই ছিল। নদীয়ায় তাহার রাজধানী ছিল। লক্ষ্মণসেনের রাজত্বকালে সেনা-বংশের গৌরব-রবি তুঙ্গস্থানে অবস্থিত হইয়াছিলেন । কিবা সাহিত্যে, কিবা শল্প-বাণিজ্যে, কিবা কারুচিত্ৰেসেনবংশের গৌরবের অবধি ছিল না । লক্ষ্মণসেনের শ্রেষ্ঠ কবি-প্ৰতিভার তুলনা নাই। তঁহারই রাজত্ব-কালে, তঁাহাবই উৎসাহবারিনিষেকে, ‘গীতগোবিন্দোব’ কবি জয়দেব-প্ৰতিভাব বিকাশ হইয়াছিল ; তঁ পাবষ্ট পৃষ্ঠপোষকতায় কবি ধোই বা ধোষ্টিক-কালিদাসেব ‘মেঘদূতের’ অনুকরণে কাব্য-রচনায় সমর্থ হইয়াছিলেন। লক্ষ্মণসেন যেমন গুণী তেমনি গুণগ্ৰাহী ছিলেন। যথার্থ পণ্ডিত তাহার নিকট সর্বদা সমাদব প্ৰাপ্ত হইত। পিতার ন্যায় লক্ষ্মণসেন ও একজন সুকবি ছিলেন । তাহার রচিত কবিতা প্ৰভৃতি-সাহিত্য জগতে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করে। মাষ্ট্ৰী বটুকদাসেব পুত্ৰ শ্ৰীধর দাস কর্তৃক সংগৃহীত “সদুক্তিকর্ণামৃত” নামক কাব্য-গ্রন্থে মহারাজ লক্ষ্মণসেনেব এবং তাঙ্কার সমসাময়িক কবিগণের কবিতা • বলি সন্নিবিষ্ট রহিয়াছে। তন্মধ্যে লক্ষ্মণসেনের কবিতা শ্রেষ্ঠস্থান অধিকার করে । 料 米 गँझ०१iा दा “दा-ा९' । লক্ষ্মণসেনের রােজ্যারম্ভের সময় হইতে একটা অব্দ-গণনার সুচনা হয় । সেই অব্দের নাম“লক্ষণ সংবৎ’, ‘লক্ষণাব্দ” বা “লা-সং’ । বঙ্গদেশে সেনা-বংশের উচ্ছেদের পাবও বহুদিন পৰ্য্যন্ত ঐ অব্দের গণনা চলিয়াছিল। মিথিলায় এবং বঙ্গেব কোনও কোনও স্থানে এখনও ঐ লক্ষ্মণাব্দ ব্যবহৃত হইয়া থাকে । লক্ষ্মণসেনের এই অব্দ সম্বন্ধে নানা মতান্তর আছে। কাহারও কাহারও মতে ঐ অব্দ লক্ষ্মণসেনের রাজ্য প্ৰাপ্তির বহু পূৰ্ব্ব হইতেই চলিয়া আসিতেছিল। উহা লক্ষ্মণসেনের প্রবত্তিত নহে। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত যে অমূলক, তাহ সাধারণ-দৃষ্টিতেই বুঝিতে পারা যায় । সেনবংশের সেই অব্দের নাম-“লক্ষ্মণাব্দ’। লক্ষ্মণসেনের পূর্ববৰ্ত্তী কোনও নৃপতি কর্তৃক প্রবত্তিত হইয়া থাকিলে, তিনি আপনার নামে ঐ অব্দের নামকরণ না করিয়া, অব্দের নাম “লক্ষ্মণাব্দ” “লক্ষ্মণ-সংবৎ’, ‘ল-সং’ প্ৰভৃতি রাখিলেন কেন ? যদি বলা যায়,-সেনবংশের সে নৃপতির নাম ও লক্ষ্মণসেন ছিল ; কিন্তু তাহার নাম বংশলতায় সন্নিবিষ্ট না হইবার কারণ কি ? অপিচ, তিনিই যদি আব্দ-প্ৰবৰ্ত্তক হন, তাহা হইলে তঁাহার তদনুরূপ শক্তি-সামর্থ্য ছিল বুঝিতে হইবে। সুতরাং সেকােপ প্ৰভুত্বসম্পন্ন নৃপতির নাম বংশতালিকা হইতে বা ইতিহাস হইতে পরিত্যক্ত হইবার বিশেষ কোনও কারণ অনুমান করিতে পারি না । অতএব আমাদের মতে “লক্ষ্মণাব্দের” প্ৰবৰ্ত্তক বঙ্গাধিপতি রায় লক্ষ্মণসেন বলিয়াই নির্দেশিত হন । তিনিই ঐ অব্দের প্রবর্তক। তঁহারই রাজ্যারম্ভ হইতে অব্দ-গণনার সূচনা হয় । 张 帶