পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জড়ভরত ভুলিতাম, আমার সাংসারিক সমস্ত দুশ্চিন্তা, শোক ও দুঃখের মধ্যে যখন এই বালক আমার অঞ্চল স্পৰ্শ করিয়া দাড়াইত, তখন আমার সুখদুঃখের প্রতি বৈরাগ্য জম্মিত, একটা আনন্দের ভাব মনে উপস্থিত হইত, তাহা পুত্ৰস্নেহজাত নহে । ইহাকে আমি কখনই পুত্র বলিয়া জানি নাই। আমার এখনও ইহার নিৰ্বিকারমুক্তি দেখিয়া দৈহিক সুখ দুঃখ আতি তুচ্ছ বলিয়া বোধ হইতেছে । আমার চিতার নিকট ইহাকে ধরিয়া রাখিও । যে পৰ্য্যন্ত চিতাগ্নি নির্বাপিত না হয়, সে পৰ্য্যন্ত ইহাকে এইখানে রাখিও । আমি শেষ মুহূৰ্ত্ত পৰ্যন্ত ইহাকে দেখিয়া লইব । আর, দিদি, এ মাতৃহীন হাৰা ছেলেকে তুমি ক্ষুধার সময় খাইতে দিও। ক্ষুধা হইলে হাবা খাইতে চাহে না ; দিদি, তুমি উহার উদারতলের কুঞ্চন দেখিয়া খাইতে দিও । আমি অরুন্ধতীর জন্য ভাবি না । আমার আর আট পুত্ৰও বড় হইয়াছে, দিদি সকলে মিলিয়া আমার হাবা ভরতকে রক্ষা করিও ।” এই কথা শুনিয়া লক্ষ্মীদেবী সাশ্রুনেত্রে ভরতকে বাহুদ্বারা জড়াইয়া ধরিলেন এবং কিছু না বলিয়া তাহার শিরে অজস্র অশ্রুবর্ষণ করিতে ਜਿਜ জনক-জননী এক চিতায় দগ্ধ হইয়া গেলেন । হাহাকার করিয়া পুত্র, কন্যা ও মাত লক্ষ্মীদেবী কঁাদিতে কঁাদিতে বাটিতে প্ৰত্যাগত হইলেন ।