পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌরাণিকী ঘরে ঘরে দেবী চণ্ডিকার পূজা হয়। নববস্ত্ৰপরিহিত যুবক-যুবতীগণের আনন্দের সীমা নাই, অভাগিনী ফুল্লির হরিণের ছড় পরিয়া দিন যাপন করিয়া থাকে । আশ্বিন মাসে মাংস-বিক্রয় একেবারে বন্ধ হইয়া যায়, দেবীর প্রসাদ-মাংস সকলে পাইয়া থাকে, " এই আনন্দের সময় আমরা নিরানন্দে কাটাই। কাত্তিক মাসে হিমা পড়িতে আরম্ভ হয়, কুজ বাটিকায় শিকার দেখা যায় না, আমাদের নিত্য উপবাস । অগ্রহায়ণ মাসে নবান্ন, তখন চাউলের মূল্য সুলভ হয বটে, আমরা নিত্য উপবাসী থাকি না, মাঝে মাঝে পেট পূরিয়া দু'টা খাইতে পাই ; কিন্তু পুরাণ ছেড়া দোপাটায় শীত ঘুচে না। মাঘ মাসে শীতে থর থর করিয়া কঁাপিয়া খড়ের আগুন জালিয়া শীত নিবারণ করি, তখন বনে একটি শাকও থাকে না। তুমি কি করিয়া এই গৃহে থাকিবে ? তুমি রাজনন্দিনী, আমরা ভিখারিণী । ফাস্তুন ও চৈত্র মাসের মন্দমারুতে কাননে নানা-প্রকার পুষ্প বিকশিত হইয়া উঠে, দম্পতীগণ প্রেমোৎসবে, বসন্তোৎসবে মত্ত হয় ; অভাগিনী ফুল্লারা তখন ক্ষুধার জালায় ছটফট করিতে থাকে ৷” দেবী বলিলেন, “এই জন্যই তা আমি আসিয়াছি। তোমাদের বারমাসী দুঃখের পালা আজ হইতে শেষ হইবে । দেখা না, আমার অঙ্গের আভরণ ; ইহার একটা মণির মূল্যে একটা রাজ্য কিনিতে পারিবে। আর দুঃখ নাই। আর আমি কি ইচ্ছা করিয়া আসিয়াছি, তোমার স্বামীর গুণে আমি বাধা পড়িয়ছি।” স্বামীর ধনুগুণের কথা দেবী বলিলেন, কিন্তু দুঃখিনী ফুল্লারা তাহা বুঝিবে কিরূপে ? তখন তাহার প্রাণে যেন একটা শেল বিধিল । যে সকল দৈস্যের কথা সে বলিয়াছে, তাহা সে একদিনের জন্যও কি 98