পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৮
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।

 বন। যে আজ্ঞে, আপনারা কিছু ব্যস্ত আছেন দেখ্‌চি, তাহলে আর এক সময় হবে।

(১১)

 রসিক। ভাই শৈল!

 শৈল। কি রসিক দাদা!

 রসিক। এ কি আমার কাজ? মহাদেবের তপোভঙ্গের জন্যে স্বয়ং কন্দর্পদেব ছিলেন—আর আমি বৃদ্ধ―

 শৈল। তুমি ত বৃদ্ধ, তেমনি যুবক দুটিও ত যুগল মহাদেব নন্!

 রসিক। তা নন্, আমি বেশ ঠাহর করেই দেখেছি। সেই জন্যেই ত নির্ভয়ে এসেছিলুম। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে রাস্তার মধ্যে হিমে দাঁড়িয়ে অর্দ্ধেক রাত পর্য্যন্ত রসালাপ করবার মত উত্তাপ আমার শরীরে ত নেই!

 শৈল। তাঁদের সংসর্গে উত্তাপ সঞ্চয় করে নেবে।

 রসিক। সজীব গাছ যে সূর্য্যের তাপে প্রফুল্ল হয়ে ওঠে মরাকাঠ তাতেই ফেটে যায়, যৌবনের উত্তাপ বুড়োমানুষের পক্ষে ঠিক উপযোগী বোধ হয় না।

 শৈল। কই তোমাকে দেখে ফেটে যাবে বলে ত বোধ হচ্চে না।

 রসিক। হৃদয়টা দেখলে বুঝতে পারতিস্ ভাই।

 শৈল। কি বল রসিক দা। তোমারি ত এখন সব চেয়ে নিরাপদ বয়েস। যৌবনের দাহে তোমার কি করবে?

 রসিক। শুষ্কেন্ধনে বহ্নিরুপৈতি বৃদ্ধিম্। যৌবনের দাহ বৃদ্ধকে পেলেই হু হুঃ শব্দে জ্বলে ওঠে—সেই জন্যেই ত বৃদ্ধস্য তরুণীভার্য্যা বিপত্তির কারণ! কি আর বল্‌ব ভাই।