পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
১৬৫

 নির্ম্মলা। অবলাকান্ত বাবু আমাকে কতকটা সাহায্য করবেন বলেচেন—আমি তাঁকে রোগীশুশ্রূষা সম্বন্ধে সেই ইংরাজী বইটা দিয়েছি, তিনি একটা অধ্যায় আজ লিখে পাঠাবেন বলেছেন—বোধ হয় এখনি পাওয়া যাবে, তাই আমি অপেক্ষা করে বসে আছি।

 চন্দ্র। ঐ ছেলেটি বড় ভাল―

 নির্ম্মলা। খুব ভাল―চমৎকার―

 চন্দ্র। এমন অধ্যবসায়, এমন কার্য্যতৎপরতা—

 নির্ম্মলা। আর এমন সুন্দর নম্রস্বভাব!

 চন্দ্র। ভাল প্রস্তাবমাত্রেই তাঁর উৎসাহ দেখে আমি আশ্চর্য্য হয়েছি।

 নির্মলা। তা ছাড়া, তাঁকে দেখ্‌বামাত্র তাঁর মনের মাধুর্য্য মুখে এবং চেহারায় কেমন স্পষ্ট বোঝা যায়।

 চন্দ্র। এত অল্পকালের মধ্যেই যে কারো প্রতি এত গভীর স্নেহ জন্মাতে পারে তা আমি কখনো মনে করিনি—আমার ইচ্ছা করে ঐ ছেলেটিকে নিজের কাছে রেখে ওর সকল প্রকার লেখাপড়ায় এবং কাজে সহায়তা করি!

 নির্ম্মলা। তা হলে আমারও ভারি উপকার হয়, অনেক কাজ করতে পারি! আচ্ছা এ রকম প্রস্তাব করে একবার দেখই না!—ঐ যে বেহারা আস্‌চে। বোধ হয় তিনি লেখাটা পাঠিয়ে দিয়েছেন। রামদীন, চিঠি আছে? এইদিকে নিয়ে আয়। (বেহারার প্রবেশ ও চন্দ্রবাবুর হাতে চিঠি প্রদান) মামা, সেই প্রবন্ধটা নিশ্চয় তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, ওটা আমাকে দাও!

 চন্দ্র। না ফেনি, এটা আমার চিঠি।

 নির্ম্মল। তোমার চিঠি! অবলাকান্ত বাবু বুঝি তোমাকেই লিখেচেন? কি লিখেছেন?