পাতা:প্রত্যাবর্ত্তন - প্রচার পুস্তিকা (১৯৫১).pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাহিনী সুদর্শন চৌধুরি রান্ন কোম্পানীর ব্রাঞ্চ আফিসের ক্যাশিয়ার। অত্যন্ত সত্যনিষ্ঠ। কিন্তু ছেলে শঙ্কর জেদী বলে তাঁকেও মাঝে মাঝে মিথ্যের আশ্রর নিতে হয়। বিস্কুট আনতে ভুলে গেলে বলেন— দোকান বন্ধ। বন্ধুর বাড়ীর নাম করে থিয়েটার দেখে আসেন স্ত্রী সুষমাকে নিয়ে। এমনি আরও কতো কি। কিন্তু পাশের বাড়ীর ক্ষিতুর শয়তানী বুদ্ধির ফলে এই সব ছোট খাটো প্রতারণাগুলি শঙ্করের কাছে ধরা পড়ে যায়। তার শিশুমনে গভীর দাগ কাটে। বাবা যদি মিছে কথা বলেন- তবে তার বলতে আপত্তি কি? সেও মিথ্যে বলতে শুরু করে শঠতার আশ্রয় নেয়। সুদর্শন বাবু তো রেগে আগুন : তাঁরই ছেলে হয়ে ঐ এক রত্তি শঙ্কর মিথ্যে বলবে! সুষমা ব'ল্লেন, এর জন্য তাঁরাই দায়ী— তাঁরাই তো ওকে কতে। ঠকিয়েছেন। সুদর্শন বাবু স্বীকার করেন না; ছেলের ভালোর জনেই সব সময় সত্য বলা চলে না। সুষমা হাসপাতালে। শঙ্করের আনন্দ আর ধরে না- ক্ষিতুর মা বলেছে তার বোন হবে। তার ওপর সুদর্শন আগেই একটা প্যারামবুলেটর কিনে এনেছেন। কিন্তু সুদর্শন সিক্ত বস্ত্রে একা ফিরলেন। বাপ হয়ে ছেলেকে সত্যি কথাটা বলতে পারলেন না। যেমন আর পাঁচজন বাপ মা করে থাকেন। কিন্তু এর ফল যে ভয়ানক তা একবারও ভেবে দেখলেন না। বললেন—মা, বোনটি পরে আসবে। কিন্তু আসল কথাটা চাপা রইলো না। শঙ্কর জানতে পারলো তার মা নেই, বোনটিও আসবে না— তার বাপ সেদিন তাকে মিছে কথা বলেছিলেন। বাবার প্রতি বিতৃষ্ণায় তার ছোট্ট বুকখানি ভরে উঠলো। ভিন্ন আদর্শে ছেলে বড় হয়ে উঠলো। এমন কোনো জুয়াচুরি নেই যা শঙ্কর পারে না। একদিন সে তার নিজের মায়েরই গহনা সরিয়ে ফেললো। সুদর্শন সে দিন তাকে বিতাড়িত করলেন। ভাবলেন যে বিষবৃক্ষের চারা তিনি রোপণ করেছিলেন তা আজ উৎপাটিত হলো।