পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>○やり প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ গ্ৰীক ভাষার প্রভূত ঐশীবাব ও অপব সৌন্দয্যের তুলনায় ল্যাটিন ভাষা ইউরোপের শিক্ষিতসম্প্রদায়ের চোখে ক্ষীণসত্ত্ব ও হীনপ্রভ হয়ে পড়ল। এই গ্ৰীক সাহিত্যের চর্চায় সে যাগের মনীষিগণ নািতন দর্শনবিজ্ঞানের সন্টি করতে ব্যগ্র হলেন। কিন্তু স্বাধীনচিন্তাপ্ৰসত দর্শনবিজ্ঞান সম্প্রতিষ্ঠিত ধমতন্ত্রকে বিচলিত করতে পারলেও বিপর্যস্ত করতে পারে না। এক ধর্মমতের স্থান অধিকার করতে পারে শািন্ধ আরএক ধর্মমত। তাই ল’থারের প্রবতিত রিফমেশনই জমানিক ভাষাসমহকে ল্যাটিনের অধীনতা থেকে যথাৰ্থ মন্তি দান করলে। ܠ ܠ লথার যেদিন জমানির লোকভাষায় বাইবেলের অন্যবাদ করলেন, সেই দিনই জমান-সাহিত্যের পাকা বনিয়াদের পত্তন হল। ভাষার সঙ্গে ধমের সম্পর্ক যে অতি ঘনিষ্ঠ, এ সত্য সকলের নিকট সম্পস্ট না হলেও নিঃসন্দেহ। মানষের মনের বাইরে ভাষা নেই, এবং ভাষার বাইরেও মন নেই। ভাষা ও মন হচ্ছে একই বস্তুর অন্তর ও বাহির। সতরাং ধৰ্মমত ভাষান্তরিত হলে রপোন্তরিত হতে বাধ্য। একটি উদাহরণ নেওয়া যাক। ইউরোপ খাস্টধর্ম অবলম্ববন করবার অব্যবহিত কাল পরেই সে দেশে দটি সম্পপণ্য পথিক খািস্টসংঘের সন্টি হল, একটি রোমে, আর-একটি কনস্টান্টিনোপলে। রোমান সাম্রাজ্য তার অধঃপতনের মখে যে দটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল, খাস্টধর্ম তার অভু্যুত্থানের মখে ঠিক সেই দটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ল। এর মািল কারণ যে ভাষার পার্থক্য, তার পরিচয় এ টেস্টামেন্ট যদি গ্রীক, অর্থাৎ ইউরোপের ভাষায় লেখা না হত, তা হলে এশিয়ার ধম ইউরোপে গ্রাহ্য হত কি না সে বিষয়েও আমার সন্দেহ আছে। ভাষার শান্তিতে আমি এতটাই বিশ্ববাস করি। এ দেশের বৌদ্ধধমও যে দটি শাখায় বিভক্ত হয়ে পড়েছিল, তার মালেও ছিল ঐ ভাষার পার্থক্য : মহাযানের ভাষা সংস্কৃত, এবং হীনব্যানের পালি । অপর পক্ষে পথিবীতে যখন কোনো নািতন ধর্মমত জন্মলাভ করে, তখন তার বাহন হয় একটি নািতন ভাষা। বৌদ্ধধম প্রচারিত হয়েছিল পালিতে, এবং জৈনধম। মাগধী প্রাকৃতে ; সতরাং লাথার যখন খাস্টধমের নন্তন সংস্করণ প্রকাশ করলেন, তখন তাঁকে ল্যাটিন ত্যাগ করে জমান ভাষারই আশ্রয় নিতে হল। তিনি এ উপায অবলম্পােবন না করলে প্রোটেস্টান্টিজম ইউরোপে একটি সর্বতন্ত্র ধম হিসেবে কখনোই প্রতিদ্ঠালাভ করতে পারত না। তার প্রমাণ, ল্যাটিনের অপভ্ৰংশ যাদের মাতৃভাষা, ইউরোপের সেই-সকল জাতি আজও রোমান ক্যাথলিক ; রোমান ভাযাই রোমান চাচের সঙ্গে তাদের মনের প্রধান যোগসন্ত্র। অপর পক্ষে যে-সকল জাতির ভাষা জমানিক, সেই-সকল জাতিই প্রোটেস্টাণ্ট। একই কারণে বাংলা সংস্কৃতের প্রভুত্ব হতে মন্তিলাভ করেছে। চৈতন্যদেবের আবিভবের পরেই বাংলা সাহিত্যের প্রকৃত অভু্যদয়ের সত্রপাত হয়েছে। মহাপ্ৰভু যেদিন ব্ৰাহ্মণ্যধর্মের বিরূদ্ধে বৈষ্ণবধমেরি, জ্ঞান ও