পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিত্রাঙ্গদা। SROY তার পর যথাকথঞ্চিৎ সাদশ্যেং যন্ত্রোঙ্গভূতং প্রতীয়তে উপমা নাম সা তস্যাঃ প্ৰপঞ্চোহয়ং নিদশ্যতে। অর্থাৎ এক অলংকারের প্রসাদে কানের কাছে শব্দসমােহ সমান অনভূত হয়, অপর অলংকারের প্রসাদে মনের কাছে বস্তুসদশে প্রতীয়মান হয়। এ বিশেবে আমাদের আপাতদন্টিতে যা বিভিন্ন তার সমীকরণ করাই হচেছ কাব্যের ধম, অর্থাৎ যা-কিছ পরস্পরবিচিছন্ন তাদের নিরবচ্ছিন্ন রােপ দিতে আর প্রক্ষিপািত জগৎকে সংক্ষিপত করতে পারে শােধ, কবিপ্রতিভা। পরাবিদ্যা যেমন আমাদের লৌকিক ভেদবদ্ধি নন্ট করে, কাব্যও তেমনি আমাদের লৌকিক ভেদন্দালিট নাট করে। এই বিশেব বহর সমপ্রাণতা ও আত্মীয়তার অনভূতিই হচ্ছে মাত্তির রসাস্যবাদ। কারণ যে মহতে ভেদবদ্ধি অপসারিত হয়। সেই মহাতে অহং আত্মা হয়ে ওঠে। আমার এ ধারণা যদি সত্য হয় তো বলা বাহাল্য যে, অন্যপ্রাস ও উপমা দাইই কাব্যের বিশেষ অন্তবঙ্গ। কারণ দশ্যজগৎ ও শব্দজগতের নিগঢ়ি সত্য ব্যক্ত করাই এদের ধর্ম। এ দই যখন কাব্যে অন্তরঙ্গ না হয়ে বাহ্য অলংকার হয় তখনই তা অগ্রাহ্য। ভাষার ও ভাবের খেলো জমির উপর উপমা-অন-প্রাসের চুমকি বসানো শধ মন্দ কবির কারদানি। /চিত্রাংগদা কাব্যের অন্যপ্রাস ও উপমা উভয়ই ওকাব্যের অন্তরঙ্গ। এ কাব্যে এমন একটিও অন্যপ্রাস কিংবা উপমা নেই যা এ কাব্যঅঙ্গে প্রক্ষিপ্ত, এবং অন্তর থেকে উদ্ভূত নয়।)সংগীতে যেমন সেই তানের চমৎকারিত্ব আছে যে তান রাগিণীর প্রাণ থেকে সম্ববত-উৎসারিত, তেমনি চিত্রাঙ্গদা-রূপ রাগিণীর অন্তরে বহ আন পাস আছে যা উন্তু রাগিণীর অন্তর থেকে সম্ভবতঃস্ফৰ্মত হয়েছে— সেই সপত সরসীর স্নিগধ শঙ্খপতটে শযন কবেন সখে নিঃশঙক বিশ্রামে... শেফালিবিকীর্ণ তৃণ বনস্থলী দিয়ে .. ধন্য সেই মগধ মাখ ক্ষীণতনলতা পরাবলম্পিবিতা লতাজাভিয়ে-লীনাভিগনী 5y ६.. এ-সব অন্যপ্রাস যে চমৎকার তার সাক্ষী কান। কিন্তু এ-সব অন্যপ্রাস অযত্নসলভ। ধবনি আপনিই দানা বেধে উঠেছে সমগ্র সংগীতপ্রাণ কাব্যের অন্তর হতে। টমসন সাহেব বলেছেন যে, এ কাব্য magical in expression, যদিচ তা অমিত্ৰাক্ষরে রচিত। এ কাব্যে যে অন্ত-অন্যপ্রাস নেই তার কারণ সমগ্র কাব্যখানিই একটি একটানা অন্যপ্ৰাস । S8 আসল কথা এই যে, অলংকার হচেছ কাব্যের একরােপ ভাষা। নব্য আলংকারিকরা অলংকারের জাতিভেদ স্বীকার করেন না। তাঁদের মতে অতিশয়োত্তি হচেছ একমাত্র অলংকার। প্রাচীনেরাও এ অলংকারকে সবোত্তম অলংকার ব’লে গণ্য করেছেন । এ অলংকার যে কি, তা প্রাচীন আলংকারিকদের মখেই শোনা যাক