পাতা:প্রবাসী কার্তিক ১৩৪৪ সংখ্যা ৭.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਉਿ ইন্দু । ওরে বাবা, সে যে সারাদিনব্যাপী হৈ চৈ ! জাছা মাকে জিজ্ঞেস ক’রে দেখি । ফুল্লরা। মা আবার কি বলবেন ? তোর ইচ্ছে হয় দাবি, না, ইচ্ছে হয় যাবি নে। এ ত ব্যক্তিগত স্বাধীন রুচির কথা । ইন্দু । [ হাসি চাপিয়। ] তাই না কি ? আচ্ছা মাসীমা এলেন না কেন ফুল্লরাদি ? ফুল্লরা। তিনি মাটিঙে গেছেন । ইন্দু। কিসের মাটিং ভাই ? ফুল্লরা। ওমা, জানিস- নে ! পদাপ্রথার বিষময় ফল বোঝাবার জন্যে যে পার্কে মস্ত মাটিং হচ্ছে । মাকে এর সভানেত্রী করেছে। আমরাও সেখানে ছিলুম। aাদের এখন দেরি আছে দেখে নিমন্ত্রণগুলো সেরে নিতে বেরিয়েছি। এই মাটিঙের কথা নিয়ে শহরময় হৈ চৈ, এর তুই কিছুই জানিস নে ? তুই কেমন যেন একটু কুনে স্বভাবের ইন্দু। মেসোমশায়, আপনার এদিকে একটু লক্ষ্য zরা উচিত। বাইরে যে একটা মস্ত জগৎ চলছে আমাদের দে-বিষয়ে দস্তুরমত খোজ রাখা উচিত। জ্ঞানদা । [ উৎসাহিত হইয়া ] নিশ্চয়, এক-শ বার ! এমিও একটুখানি আগে ঠিক সেই কথাই ইন্দুকে বলছিলুম কিন্তু তোমার মাসীমা— - মোহিনী । [ হলিক্সের পেয়ালা-হাতে প্রবেশ করিয়া ] কিন্তু মাসীমা কি ?—বল না সবটা, থামলে কেন ?...ও মা ... দে রায়মণায়মৃদ্ধ এসেছেন, কত ভাগ্যি ! [জ্ঞানদার eাতে পেয়ালাটা দিয়া ] একটু সবুর করতে হবে কিন্তু, অমনি 家rgf@ নে একটু মিষ্টিমুখ... ফুল্লরা । [ একেবারে উঠিয়া দাড়াইয়া ] ন ন মাসীম, রাপ করতে হবে। এখনও আমাদের অনেক জায়গায় নেগেজমেন্ট বাকী রয়েছে। [ রিষ্টওয়াচের দিকে চাহিয়া ] ঠিক সাতটা পয়ত্ৰিশের মধ্যে মিসেস মণ্ডলের বাড়ী পৌঁছান তিনি আবার বেরিয়ে যাবেন । বরঞ্চ বাবা কিছুক্ষণ বস্থান, আমি ফিরবার সময় ওঁকে তুলে নেব। [ হিলউ চু জুতা খট্‌খট্‌ করিয়৷ চলিয়া গেল ] জ্ঞানদা। [ গ্রীকে লক্ষ্য করিয়া ] শুনলে ত রায়মশায়ের গৃহিণী একটা কত বড় সভার প্রেসিডেন্ট হয়ে মাটিঙে घ1 I 5tを1 স্বরের উৎস SSS গেছেন। তার কত বড় দায়িত্ব, দেশের দুঃখদুর্দশা ঘোচাবার জন্তে নিজের অনেকখানি দিয়েছেন, আর তুমি ? -- মোহিনী । [ বিন্দুমাত্র লজ্জিত না হইয়া ]...আর আমি সম্প্রতি চললুম রায়মশায়ের জন্তে গোটাকতক গোকুল-পিঠে আনতে । ওবেলা তৈরি করেছি। আপনি এই পিঠে খুব ভালবাসেন, নয় রায়মশাই ? প্রস্থান করিলেন ] মনোজ । [ একটা নিঃশ্বাস ফেলিয়া একবার সতৃষ্ণ নয়নে ঘরের চারি দিকে এবং একবার জ্ঞানদাবাবুর দিকে তাকাইয়া ] কি ষে ভালবাসি আর কি বাসি নে তা অনেক দিন হ’ল ভুলে গেছি দাদা। বামুনে কিংবা বাবুর্তিতে যা তৈরি করে এনে দেয় খাই । কোন বিকার নেই, ক্ষুন্নিবৃত্তি হলেই হ’ল । কেবল অনেক রাত্রিতে কাজকৰ্ম্ম সেরে খেটে খুটে যখন । বিছানায় এসে দেখি চাকর বেটা এমন ক’রে মশারি থাটিয়েছে যে সারারাত্রি মশার কামড় খাওয়া ছাড়া উপায় নেই, তখন রীতিমত কষ্ট হয়। কিন্তু গৃহিণীকে একথা বলতে কেমন যেন লজ্জা করে। যিনি দেশের দুঃখ-দুর্দশা মোচনের ভার নিয়েছেন, তাকে কি ক’রে বলি আজ তরকারিতে মুন হয় নি কিংবা মশারিট উটমুখে ক’রে টাঙান হয়েছে। জ্ঞানদা। [ উত্তরোত্তর মুগ্ধ হইয়া ] দেখলি ইন্দু দেখ! আর তোর মা ? ..তার কাছে মশারির একটা কোণ সোজা করে টাঙান দেশের সব বড় বড় সমস্তার চেয়ে মূল্যবান ! এ যে ভগবানের দেওয়া এত বড় জীবনটার দস্তুর মত অপব্যয় ! ইন্দিরা [ হাসিয়া ] ও সব বড় বড় কথা ভাবতে গেলে এই দুৰ্ব্বল শরীরে তোমার আবার মাথা ঘুরবে বাবা । তার চেয়ে মা যতক্ষণ না খাবার আনছেন আমি একটু এস্রাজ বাজাই । ইন্দির এস্রাজ বাজাইতে লাগিল। ইমনকল্যাণের করণ স্বর শাস্ত সন্ধ্যায় ঘরের ভিতর লুটাইয় পড়িতে লাগিল ।] দ্বিতীয় দৃপ্ত - ইন্দিরার পড়িবার ঘর। এক কোণে একটি অর্গান । শেলুফে কিছু বই সাজানে। ঘরের মাঝখানে একটি টেবিলে ফুলদানিতে ফুল ।